Coronavirus Lockdown

মিলছে না ইচ্ছেমতো বই, সঙ্কটে পাঠক ও বিক্রেতা

এক ব্যবসায়ী জানান, জেলার বইয়ের ব্যবসার একটা বড় অংশ কলকাতার উপর নির্ভরশীল।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২০ ০৫:২২
Share:

বইয়ের দোকান খোলা। নিজস্ব চিত্র

শর্ত সাপেক্ষে বইয়ের দোকান খুলেছে ২৪ এপ্রিল থেকেই। ইতিমধ্যে লকডাউন ধীরে ধীরে শিথিল হয়ে আনলক-ওয়ান চালু হয়েছে। জেলায় জনজীবন প্রায় স্বাভাবিক হলেও স্কুল, কলেজ, টিউশন বন্ধ। কিন্তু পড়াশোনা তো করতেই হচ্ছে। সেই বই মিলবে কোথায়?

Advertisement

বইয়ের দোকানগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, কলকাতার সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ থাকায় অনেক বই ব্যবসায়ীই প্রয়োজনীয় বই নিয়ে আসতে পারেননি। তাই কোনও পড়ুয়া যদি বা বইয়ের দোকানে যাচ্ছেন, তিনি দরকারি বই পাচ্ছেন না।

এক ব্যবসায়ী জানান, জেলার বইয়ের ব্যবসার একটা বড় অংশ কলকাতার উপর নির্ভরশীল। বইয়ের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন প্রুফ রিডার, কম্পোজার, প্রেস, বাইন্ডিং, পরিবহণ ব্যবস্থা। করোনার জেরে সব কিছু প্রায় বন্ধ। যার জেরে নতুন করে অনেক বই ছাপানো হচ্ছে না। ফলে সে সব বই পেতে সমস্যা হচ্ছে। আবার অনেক সময় জেলার বই বিক্রেতারা এলাকার পাঠকদের বরাত দেওয়া বইও কলকাতায় গিয়ে নিয়ে আসেন। কলকাতার অন্য বেস্টসেলারও বইও নিজেরা দেখে কিনে ট্রেনে করে ফেরেন। ট্রেন বন্ধ থাকায় সে সবই এখন বন্ধ। রাজ্যের শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকা মতো সেপ্টেম্বরের আগে স্কুল-কলেজ খোলার সম্ভাবনাও নেই। এ ছাড়া টিউশনও বন্ধ। বহরমপুরের খাগড়ার বই ব্যবসায়ী তুষার দত্ত বলেন, ‘‘বাংলা মাধ্যমে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কোনও বই বিক্রি নেই। এ ছাড়া প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা বা জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মতো পরীক্ষার সব রেফারেন্স বই পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ৫-১০ শতাংশ খরিদ্দার নিয়ে ব্যবসা চলছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘একদিকে অন্য বইয়ের ঠিক মতো সরবরাহ নেই। আবার পরিবহণ খরচ প্রায় দ্বিগুন হয়েছে। ফলে বই ব্যবসা সঙ্কটের মধ্যে চলছে।’’

Advertisement

মুর্শিদাবাদ জেলা সম্মিলিত পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তথা বহরমপুরের কাদাইয়ের বই ব্যবসায়ী নেপাল চন্দ্র দাস বলেন, ‘‘লকডাউনের প্রভাব বই ব্যবসার উপরে পড়েছে। স্কুল কলেজ বন্ধ থাকার কারণে পড়ুয়া বই কিনতে আসছে না। আবার লকডাউনের কারণে সব পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এ বারে ১০-১৫ শতাংশের বেশি ব্যবসায়ী হয়নি।’’

কাদাইয়ের বই ব্যবসায়ী পিন্টু শেখ বইয়ের দোকানে স্টেশনারি সামগ্রী রেখে বিক্রি করছেন। পিন্টু বলেন, ‘‘খরিদ্দার নেই বললেই চলে। তাই বইয়ের সঙ্গে স্টেশনারি সামগ্রীও রেখেছি।’’ কাদাইয়ের অপর বই ব্যবসায়ী প্রসেনজিৎ দাস অবশ্য আশার কথা শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘লকডাউনে বইয়ের হোম ডেলিভারি করেছি। একাদশ, স্নাতক ক্লাসের এবং গ্রামীণ এলাকার পাইকারি বই বিক্রি বাদে ব্যবসা ভাল হয়েছে।’’

তাই পাঠক ও বিক্রেতা, সকলেই অপেক্ষায় রয়েছেন ট্রেন চলার। তা হলেই খুলবে বইয়ের দুনিয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement