মুকুল রায় ও জগন্নাথ সরকার। নিজস্ব চিত্র
কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক তথা নদিয়া জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের মামলায় কেন তাঁদের ছাড় দেওয়া হবে, তা জানতে চেয়ে বিজেপি নেতা মুকুল রায় এবং সাংসদ জগন্নাথ সরকারকে নোটিস দেওয়ার নির্দেশ দিল রানাঘাট আদালত।
প্রথমে অভিযুক্তের তালিকায় নাম থাকলেও পরে নিষ্কৃতি পেয়েছিলেন ওই দুই নেতা। কিন্তু অভিযোগকারী মিলন সাহা আদালতের কাছে রায় সংশোধনের আবেদন জানান। সেই মামলার শুনানি হয়েছে বৃহস্পতিবার। মিলন সাহার আইনজীবী অঞ্জনকুমার দে-র বক্তব্য শোনার পরে রানাঘাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক শুভদীপ মিত্র জানান, আগামী ২ নভেম্বর মুকুল ও জগন্নাথকে নিজে বা আইনজীবী মারফত আদালতের কাছে তাঁদের বক্তব্য পেশ করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে সন্ধ্যায় মুকুল দাবি করেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন করে হোক আমায় গ্রেফতার করে জেলে ঢোকাতে চাইছেন। কারণ তিনি বুঝতে পারছেন যে তৃণমূল ভাঙছে। এই মামলা দিয়ে তিনি শেষ চেষ্টা করছেন। কিন্তু পারবেন না।’’ আর রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথের দাবি, “সামনে বিধানসভা নির্বাচন। সেই কারণেই নতুন করে আমাদের নাম জড়ানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে নিজের বাড়ির কাছেই একটি অনুষ্ঠান দেখার সময়ে সত্যজিৎ খুন হয়েছিলেন। ঘটনার তদন্তে নেমে সিআইডি পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। মুকুল ও জগন্নাথ গ্রেফতার না হলেও তাঁদের নাম অভিযোগপত্রে ছিল। শেষ পর্যন্ত ধৃতদের তিন জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়। প্রমাণাভাবে ১৪ জুন কার্তিক মণ্ডল ওরফে মিঠুন ও কালীপদ মণ্ডল ওরফে কালিদাসকে নিষ্কৃতি দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে মুকুল এবং জগন্নাথও নিষ্কৃতি পান।
মিলনের আইনজীবীর দাবি, দুই নেতাকে নিষ্কৃতি দেওয়া আইনগত দিক দিয়ে ঠিক হয়নি। কেননা তদন্ত চলাকালীন সন্দেহজনক তালিকায় থাকলে তদন্তকারী অফিসারের পেশ করা রিপোর্টের ভিত্তিতে কাউকে সেই মামলা থেকে নিষ্কৃতি দেওয়া আইনত অবৈধ। তাই গত ২০ অগস্ট আগের আদেশ বাতিল করে তা সংশোধনের আবেদন করা হয়েছিল।
বিজেপি সাংসদ জগন্নাথের দাবি, “বিষয়টি নিয়ে নোংরা রাজনীতি করা হচ্ছে। ওই ঘটনায় আমাদের বিরুদ্ধে সিআইডি কিছু পায়নি। তাই নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল। তবু বিচারব্যবস্থার সঙ্গে আমরা সব রকম সহযোগিতা করব।” আর, মুকুলের আইনজীবী সুমন রায় বলেন, ‘‘যা আইনি পদক্ষেপ করার, সবই করা হচ্ছে।’’