রক্ত দিচ্ছে জোল সুপার হুল বর্মন।—নিজস্ব চিত্র
হাসপাতালে ভর্তি মায়ের রক্ত লাগবে। জেলে বন্দি ভাই ও অসুস্থ মায়ের একই রক্তের গ্রুপ (এ পজিটিভ)। ভাই যাতে মাকে রক্ত দিতে পারেন, সে জন্য রানাঘাট উপ-সংশোধানাগারের সামনে দাঁড়িয়ে কাতর আবেদন জানিয়েছিলেন বগুলার বাসিন্দা রাখি বিশ্বাস। জেলের সুপার হুল বর্মন তাঁর ভাইকে ছেড়ে দেননি বটে, তবে রক্তের গ্রুপ মিলে যাওয়ায় নিজেই গেলেন হাসপাতালে। রক্ত দিতে। শনিবার বিকাল ৪টে নাগাদ তিনি রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে রক্ত দিয়ে আসেন।
হাসঁখালির বগুলা পূর্বপাড়ার বাসিন্দা অভিজিৎ সরকার রানাঘাটের উপ-সংশোধানাগারে রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। রক্তঅল্পতার কারণে তার মা অঞ্জলি সরকার বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি।
অঞ্জলির মেয়ে রাখি জানান, চিকিৎসকেরা তাঁকে জানিয়েছিলেন, তাঁর মায়ের দু’বোতল রক্তের প্রয়োজন। অনেক চেষ্টা করে এক জন দাতার খোঁজ পেয়েছিলেন। তিনি জানতেন, তাঁর মায়ের ও বিচারাধীন বন্দি ভাইয়ের রক্তের গ্রুপ একই। তাই উপ-সংশোধানাগারে গিয়ে ভাইকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য সুপারের কাছে অনুরোধ জানিয়োছিলেন।
তিনি বলেন, ‘‘আমার কথা শুনে সুপার নিজে রক্ত দিতে এসেছিলেন। এটা ভাবতে পারিনি। তিনি রক্ত দেওয়ায় চিন্তা মুক্ত হয়েছি।”
সুপার রাহুল বর্মন বলেন, “মেয়েটি রক্ত দেওয়ার জন্য ভাইকে ছেড়ে দিতে বলেছিলেন। আমি তা পারি না। কিন্তু রক্তের গ্রুপ মিলে যাওয়ায় আমি তাঁকে বলেছিলাম, যদি ‘দাতা’ খোঁজ না পান, তা হলে আমি রক্ত দিয়ে আসব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তখনই জানলাম, এক জন দাতাকে পাওয়া গিয়েছে। অনেক খুঁজেও আর এক জনকে পাননি। তখনই রক্ত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।”
রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার শ্যামলকুমার পোড়ে বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। খুব ভাল লাগল। ব্লাডব্যাঙ্ক সব সময় খোলা। এখন অনেকেই সরাসরি হাসপাতালে এসে রক্ত দিয়ে যাচ্ছেন।”