ধস্তাধস্তি: মেডিক্যালে হাতাহাতি। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
একাধিক ঘটনায় সোমবার দফায় দফায় তেতে উঠল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল চত্বর। হেনস্থার শিকার হলেন স্বাস্থ্য ভবনে কর্মরত এক পদস্থ কর্তাও। তিনি এ দিন হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছিলেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। পুলিশি সক্রিয়তায় বড় গোলমাল এড়ানো যায়।
সদ্যোজাত সন্তানের মৃত্যুকে ঘিরে সোমবার সকালে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ ‘মাতৃমা’-তে উত্তেজনা তৈরি হয়। হাসপাতালের মধ্যে ঢুকে রোগীর বাড়ির লোকজন চিকিৎসক, জুনিয়র ডাক্তার ও নার্সদের হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। হাসপাতাল ভাঙচুরের উপক্রম হয়। পুলিশ ও হাসপাতালের কর্মীরা কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দেন।
অন্তঃসত্ত্বা রিঙ্কি পানকে রবিবার দুপুরে ভর্তি করানো হয়। সোমবার ভোরে তিনি মৃত সন্তান প্রসব করেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান। রিঙ্কির মা, বহরমপুরের সাটুইয়ের বাসিন্দা চন্দনা পালের অভিযোগ, ভর্তি করানোর পর থেকেই তাঁর মেয়ের শরীর খারাপ হতে শুরু করে। ডাক্তার ওষুধ ও স্যালাইন দেন। ভোরে স্বাভাবিক ভাবে বাচ্চা হওয়ার সময় লেবার রুমে কোনও ডাক্তার ও নার্স ছিল না।
যদিও ওই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। স্ত্রী-রোগ বিভাগের প্রধান বিএন শীল জানান, ওই প্রসূতির পেটের মধ্যেই সন্তান মারা গিয়েছিল। ওষুধ-স্যালাইন দিয়ে স্বাভাবিক ভাবে মৃত সন্তান প্রসব করানো হয়।
এ দিনই ওই একই বিভাগে মৃত্যু হয় আসলেমা বিবি (৪২) নামে এক মহিলার। আসলেমা বিবির স্বামী কাশেম শেখ জানান, চিকিৎসকের গাফিলতিতে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। সময় মতো ডাক্তার না দেখার কারণেই ওই বিপত্তি ঘটেছে।
চিকিৎসক বিএন শীল বলেন, ‘‘আসলেমা বিবির এ বার অষ্টম সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য ভর্তি হন। সন্তানটি পেটের ভিতরেই মারা যায়। আল্ট্রাসোনোগ্রাফি রিপোর্টে তার প্রমাণ রয়েছে। বয়সের কারণেই ওই মহিলা এ দিন সকালে আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত মারা যান।’’
ওই দুই মৃতের পরিবারের লোকজন সহ আরও কয়েকজন মিনলে এ দিন হাসপাতাল পর্যবেক্ষণে আসা মেডিক্যাল সার্ভিস শাখার সচিব বিনোদকুমারকে ঘিরে ধরে ক্ষোভ দেখান। কোনও রকমে তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। গোটা ঘটনাটি মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক শারদকুমার দ্বিবেদীর সামনে ঘটে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার সুহৃতা পাল জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে ওই দুই মৃত্যুর তদন্ত করা হবে।