সকাল থেকে রেল অবরোধ। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।
থমকে থাকা ট্রেনের দরজা ধরে কেঁদে ফেলেছিলেন বছর পঞ্চাশের প্রমিতা চৌধুরী। তাঁর স্বামী কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। কাঁদতে-কাঁদতেই তিনি বলেন, “আমি না পোঁছতে পারলে চিকিৎসা থমকে যাবে। আমাকে যেতেই হবে।”
তাঁর কান্না দেখে এগিয়ে আসেন এক যুবক। তাঁকে কোলে করে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেন। দলে-দলে লোক তখন জালালখালি বাসস্ট্যান্ডের দিকে ছুটছে। অবরোধে তখন আটকে রয়েছে শিয়ালদহের লোকাল।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কৃষ্ণনগরের কাছে জালালখালি হল্ট স্টেশনে অবরোধে অচল হয়ে রইল শিয়ালদহ থেকে লালগোলা রেলযাত্রা। সকাল ৭টা ৫-এর শিয়ালদহগামী ট্রেন জালালখালি স্টেশনের কিছুটা আগেই আটকে দেন অবরোধকারীরা। তাঁদের দাবি, ওই হল্ট স্টেশনে সমস্ত ট্রেন থানাতে হবে। শিয়ালদহের ডিআরএম এসে লিখিত প্রতিশ্রুতি না দিলে তাঁরা নড়বেন না। তাঁদের যুক্তি, এখান থেকে প্রচুর চাষি কলকাতায় ফুল ও অনাজ নিয়ে যান। এলাকায় কোনও হাইস্কুল না থাকায় প্রচুর পড়ুয়া প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার দূরে কৃষ্ণনগর বা বাদকুল্লার স্কুলে পড়তে যায়। ট্রেন না থামায় সকলেই সমস্যায় পড়ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জিআরপি এবং আরপিএফ এসে বোঝানোর চেষ্টা করলেও তাঁরা নিরস্ত হননি। ঘণ্টা চারেক পর ট্রেনটিকে স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হয়। যাত্রীরা ট্রেন ফাঁকা করে বাসস্ট্যান্ডের দিকে ছোটেন। জালালখালি প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদানন্দ বিশ্বাস বলেন, “আমরা বুঝতে পারছি মানুষের প্রচন্ড সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু আমাদেরও কিছু করার নেই।”
বিকেলে সেখানে যান কৃষ্ণনগর সদর মহকুমাশাসক চিত্রদীপ সেন। তিনি বলেন, “অবরোধ তুলে নিলে ডিআরএম বুধবারই নিজের দফতরে প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ওঁরা তাতেও রাজি হননি।” রেলের তরফে কয়েকটি ট্রেন থামানোর প্রস্তাবও তাঁরা ফিরিয়ে দেন।