সহকারী সুপারের ঘরের সামনে ছাগল। তেহট্ট মহকুমা হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র।
কুকুর-বিড়াল তো আছেই। হাসপাতাল ভবনের মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে ছাগলও। মেডিক্যাল রিপ্রেজ়েন্টেটিভদেরও অবাধ যাতায়াত। শুধু সাংবাদকর্মীরা সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দিকে যেতে গেলেই রে-রে করে তেড়ে আসছেন নিরাপত্তা রক্ষীরা।
যাঁর ‘নির্দেশে’ এই বাধা দেওয়া, তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালের সেই সহকারী সুপার (নন-মেডিক্যাল সুপার) এস এম আজাদের অফিসের সামনেই এ দিন ছাগল চরে বেড়াতে দেখা যায়। কিছু দূরেই শুয়ে একটি কুকুর। ঠিক তার পাশেই সেই ঘর, যেখানে কুকুর-বিড়াল কামড়ালে বা আঁচড়ালে টিকা দেওয়া হয়!
সহকারী সুপারের যে এমন কোনও ‘নির্দেশ’ দেওয়ার এক্তিয়ার নেই তা বৃহস্পতিবারই জানিয়ে দিয়েছিলেন নদিয়া জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) জ্যোতিষচন্দ্র দাস। শুক্রবার তিনি নিজেই ওই হাসপাতালে পরিস্থিতি দেখতে আসেন। পরে তিনি বলেন, “হাসপাতাল সুপারের কার্যালয়ে পুলিশ আধিকারিক ও মহকুমাশাসকের উপস্থিতিতে আলোচনা হয়েছে। সাংবাদিকদের যে বাধা দেওয়া যাবে না, সে কথা সুপার ও সহকারীকে জানিয়ে আসা হয়েছে।”
অথচ ওই আলোচনা শেষ হওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পর সংবাদকর্মীরা জরুরি বিভাগে যেতে চাইলে ফের সংবাদমাধ্যমকে বাধা দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। প্রশ্ন উঠছে, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নির্দেশের পরেও কী আড়াল করতে সংবাদকর্মীদের বাধা দিতে এত মরিয়া সহকারী সুপার? এ সম্পর্কে জানতে একাধিক বার তাঁকে ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। ফোন ধরেননি তেহট্ট হাসপাতাল সুপার বাপ্পাদিত্য ঢালিও।
সম্প্রতি ওই হাসপাতালের এক মাত্র জেনারেল সার্জেন অভিষেক দে জেলাশাসক ও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছেন যে সুপার ও সহকারী সুপার নিজেদের মর্জিমাফিক চলছেন। যেখানে নন-মেডিক্যাল সুপারের দায়িত্ব ‘গ্রুপ ডি’ কর্মী, সাফাইকর্মী, নিরাপত্তা রক্ষীদের বিষয়ে দেখভাল করা, আজাদ সেখানে বহির্বিভাগে গিয়ে ডাক্তারদের উপর নজরদারি করছেন, ছবি তুলছেন।
এ দিন চিকিৎসক অভিষেক দে বলেন, “জেলাশাসক ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে দেওয়া ওই লিখিত অভিযোগের প্রতিলিপি আজ কলকাতায় স্বাস্থ্য ভবনেও দিয়ে এসেছি।”
তিনি আপাতত হাসপাতালে না-আসায় সমস্যায় পড়ছেন বহু রোগী ও তাঁদের পরিবার। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “বিষয়টা সুপারকে দেখতে বলা হয়েছে।”