প্রতীকী ছবি।
সরকারের নয়া কর্মসূচির জন্য ক্যাম্প, অজস্র মানুষের ভিড়। তবে, সে সব ছাপিয়ে মানুষ নির্নিমেষ দেখছেন দুই জনপ্রতিনিধির তুমুল ঝগড়া। তৃণমূলের কোন্দল এ যাবত ছিল আড়ালে, এ দিন তা একেবারে মুখোমুখি এসে পড়ল। যা দলের জেলা নেতাদের একই সঙ্গে মুখ পোড়াল এবং বিরোধীদের হাতে তুলে দিল অস্ত্র। এমনই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। এ দিনের বাগ-বিতণ্ডার দুই চরিত্র নওদার তৃণমূল বিধায়ক সাহিনা মমতাজ খান এবং শাসকদল পরিচালিত বালি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অপর্ণা হালদার। শুক্রবার বালি গ্রাম ১ পঞ্চায়েতের এই ঘটনার ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
ওইদিন, নওদার বালি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে চলছিল ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির বিশেষ শিবির। প্রশাসনের তরফে ওই শিবিরের আয়োজন করা হলেও তত্ত্বাবধানে ছিল গ্রাম পঞ্চায়েত। শুক্রবার দুপুরে ওই শিবিরের কাজ কেমন চলছে, সাধারণ মানুষ কেমন পরিষেবা পাচ্ছেন, তা দেখতে যান বিধায়ক। তাঁর অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধান ওই ক্যাম্পে উপস্থিত থাকলেও তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি। সৌজন্যের ধার ধারেননি তিনি। দলের অন্দরের খবর, শেষ পর্যন্ত বিধায়ক ওই প্রধানের সঙ্গে নিজেই যেতে কথা বলতে এগিয়ে গেলে ওই পঞ্চায়েত প্রধান তাঁকে পাল্টা জিজ্ঞাসা করেন ‘‘কাকে বলে আপনি এই শিবিরে এসেছেন!’’
প্রধানের এই আচরণের প্রতিবাদ করেন বিধায়ক ও তাঁর অনুগামীরা। এরপরই তাঁরা জড়িয়ে পড়েন ঝগড়ায়। বিতণ্ডা এমন স্তরে পৌঁছয় যে এক সময়ে ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরাও এগিয়ে এসে বলতে বাধ্য হন ‘ম্যাডাম ছেড়ে দিন!’
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত প্রধান অপর্ণা হালদার সভাধিপতি মোশারফ হোসেন ঘনিষ্ঠ, স্থানীয় বিধায়ক যে জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠ অনুগামী, তা-ও অজানা নয়। কোন্দলের শুরু সেখান থেকেই।
বিধায়ক সাহিনা মমতাজ বলেন, ‘‘নিজের এলাকায় সরকারি কর্মসূচির কাজ খতিয়ে দেখতে গেছি, তা আবার কাকে বলে-কয়ে যেতে হবে!’’ ঝগড়া শেষে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘প্রধান যা আচরণ করেছেন এবং তাঁর যা ঔদ্ধত্য দেখলাম, সাধারণ মানুষের সঙ্গে কী ব্যবহার করেন সহজেই অনুমেয়। আমি বিষয়টা অবশ্যই দলকে জানাব।’’ স্থানীয় প্রধান অপর্ণা হালদার অবশ্য নিজের যুক্তিতে অনড়, ‘‘আমি নিজের কাজে ব্যস্ত ছিলাম তাই অত খেয়াল করিনি কে এল কে গেল, ওঁর তো আমাকে জানিয়ে আসা উচিত ছিল। তা হলে সৌজন্য দেখাতাম।’’
তবে কিঞ্চিৎ অস্বস্তি নিয়েই দলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান বলেন, ‘‘এখানে গোষ্ঠী বিবাদের প্রশ্ন নেই, হয়তো ওঁদের মধ্যে কোনও ভুল বোঝাবুঝি থেকেই কথা কাটাকাটি হয়েছে।’’ এখন প্রশ্ন, একই দলের দুই জনপ্রতিনিধির ভুল বোঝাবুঝিও প্রকাশ্যেই হতে পারে তা হলে?