—প্রতীকী ছবি।
বিচারাধীন এক বন্দির মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ালো মুর্শিদাবাদ জেলায়। মৃতের নাম রাকিব শেখ (৩৬)। বাড়ি সুতি থানার অন্তর্গত পাঁচগাছিয়া এলাকায়। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, কোনও কারণ ছাড়াই পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছিল রাকিবকে। পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন রাকিবকে মারধর করার কারণে অসুস্থ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলেও অভিযোগ পরিবারের সদস্যদের। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
রাকিবের পরিবারের দাবি, শুক্রবার রাকিবকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। কোনও অভিযোগ ছাড়াই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রাকিবের বাবার। পরিবারের তরফে এ-ও জানানো হয়েছে, পুলিশ হেফাজত থেকে রাকিবকে আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাঁকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর পর রবিবার জেলের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন রাকিব। তাঁকে জঙ্গিপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে রাকিবের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই মঙ্গলবার মধ্যরাতে মৃত্যু হয় তাঁর। বুধবার রাকিবের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
তবে রাকিবের মৃত্যুর পরেই পুলিশের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। রাকিবের মৃত্যু প্রসঙ্গে তাঁর বাবা জাকির শেখ বলেন, “বাড়ি থেকে ধরে থানায় নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। বলেছিল সন্ধ্যায় ছেড়ে দেবে। সন্ধ্যায় ফোন করলাম। বলল সকালে ছাড়ব। তার পর আদালতে চালান করে। কিন্তু কোনও অভিযোগের কাগজ আমাদের দেখানো হয়নি। পুলিশের মারে মৃত্যু হয়েছে। জঙ্গিপুরে ভর্তি ছিল। ওখানে বলেছে ছেলেকে মেরেছে।”
অন্য দিকে রাকিবের পরিবারের তরফে আনা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।
ফারাক্কা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রসপ্রীত সিংহ বলেন, ‘‘মৃত ব্যক্তিকে যখন আদালতে পেশ করা হয়, তখন তাঁর শারীরিক পরীক্ষায় সব কিছু ঠিক ছিল। সেই সমস্ত নথি আমাদের কাছে রয়েছে। জেল হেফাজতে কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হল খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, চলতি বছরেই পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন এক বন্দি মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম। পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তভার যায় সিআইডির হাতে। তদন্তকারী আধিকারিক এবং থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার পর ফের এই মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।