কাঁচা বাড়ি দেখিয়ে নওদার মধুপুরে কেন্দ্রীয় দলের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছেন এক বাসিন্দা। নিজস্ব চিত্র
আবাস প্লাস নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এসে গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের ক্ষোভের মুখে পড়লেন ‘সেন্ট্রাল লেভেল মনিটর’ দলের সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের দুই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে জেলা ও ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের ঘিরে ক্ষোভ দেখান নওদার মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মধুপুর গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। বৃহস্পতিবার সকাল এগারোটা নাগাদ নওদা ব্লক অফিসে পৌঁছন কেন্দ্রের প্রতিনিধি দলের প্রতিনিধিরা। সঙ্গে ছিলেন জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক রাজর্ষি নাথ। ব্লকের সভাকক্ষে বিডিও সহ অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠক করেন তাঁরা। এরপর মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মধুপুর, ডাঙাপাড়া গ্রামে আবাস প্লাস তালিকায় নাম থাকা একাধিক বাড়ি ঘুরে দেখেন তাঁরা।
স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মী, আবাস যোজনার দায়িত্বে থাকা কর্মীরাও তালিকা ধরে বেশ কিছু বাড়িতে নিয়ে যান কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের। ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা প্রথমেই মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল সদস্য সাগরিকা বিবির বাড়িতে যান। জানা গিয়েছে ওই পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী নুরুল হুদার নাম রয়েছে আবাস তালিকায়। পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও কিভাবে ওই পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর নাম আবাস তালিকায় তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা এমনকি দলের অন্দরের একাংশও। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ওই বাড়ির সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করলেও কেউ সাড়া দেননি। ওই গ্রামেই বেশ কিছু বাসিন্দা কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের অভিযোগের কথা বলতে যান। তাঁরা গাড়িতে উঠে গেলে গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন বেশ কিছু যুবক। পরে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক রাজর্ষি নাথ,স্থানীয় বিডিও সত্যজিৎ হালদার কথা বলেন বিক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের সঙ্গে। তাঁদের অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাসও দেন প্রশাসনের কর্তারা।
ওই পঞ্চায়েত সদস্যা শঙ্করী হালদার বলেন, ‘‘যখন সমীক্ষা হয়েছিল তখন এ রকম বাড়ি ছিল না। পরে বাড়িঘর তৈরি হয়েছে।’’ তবে তথ্য যাচাইয়ের সময় তালিকা থেকে নাম বাদ যায়নি কেন, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।
ডাঙাপাড়া হালদারপাড়া গ্রামের এক গৃহকর্ত্রী প্রতিনিধিদলের সদস্য ও প্রশাসনের কর্তারাদের নিজের পাটকাঠির ছাউনির বাড়ি দেখিয়ে বলেন, ‘‘আমার চার ছেলেমেয়ে, বাড়ি করতে পারিনি। আমি কী সরকারি ঘর পাওয়ার যোগ্য নই?’’
নওদার বিডিও সত্যজিৎ হালদার বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তালিকা ধরে বেশ কিছু বাড়ির অবস্থা খতিয়ে দেখা হয়েছে। গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগের কথাও আমরা শুনেছি। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের আমরা সহায়তা করেছি।’’ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সেলিম রেজা সরদার বলেন, ‘‘আমরাও চাই যাঁরা যোগ্য তাঁরাই সহায়তা পাক।’’