গুরুতর জখম আইসি তাপস পাল।
সিপিএম এবং তৃণমূলের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে জখম হলেন তেহট্ট থানার আইসি-সহ অন্তত সাত জন। পুলিশের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, উড়ে আসা ইটের ঘায়ে তেহট্টের আইসি তাপস পালের মাথা ফেটেছে। পায়েও চোট লেগেছে। গুরুতর জখম আইসি-কে রাতে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালের এইচডিইউ-তে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই পড়েছে। বুধবার রাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকা ঘিরে রেখেছে। কেউ গ্রেফতার হয়েছে কি না তা জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় তেহট্টের আশরফপুরে সিপিএম ও তৃণমূলের দু’টি মিছিল মুখোমুখি এসে পড়ে। তার পরেই গোলমাল শুরু হয়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে তেহট্ট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষের মাঝখানে পড়ে যায়। ইটবৃষ্টি হতে থাকে। বাঁশ এবং হাঁসুয়া নিয়ে পুলিশকে তাড়া করা হয় বলেও অভিযোগ। রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, তেহট্ট থানার আইসি তাপস পাল, তিন পুলিশকর্মী, এক সিভিক কর্মী ও দুই চালক।
কী করে একই সময়ে দুই দলের মিছিল মুখোমুখি চলে এল?
সিপিএমের তেহট্ট দক্ষিণ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুবোধ বিশ্বাস বলেন, “পুলিশ আমাদের এই মিছিল করার অনুমতি দিয়েছিল। তৃণমূলের লোকজন কোনও অনুমতি না নিয়ে হঠাৎ করে আমাদের সামনে চলে আসে। এর পরেই সমস্যা তৈরি হয়।” তাঁর দাবি, পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে। পরে তৃণমূল কর্মীরা পাল্টা পুলিশের উপর চড়াও হয়। নাকাশিপাড়ার বিধায়ক তথা তৃণমূলের উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি কল্লোল খাঁ পাল্টা বলেন, “তৃণমূল এটা কখনই করতে পারে না। সিপিএম আবার আগের মতো পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে।”
কিছু দিন আগেই বড় চাঁদঘরে বোমার ঘায়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি ও এক সিভিক ভলান্টিয়ার আহত হন। অভিযোগ ছিল সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এ দিনও সিপিএমই বেশি আক্রমণাত্মক ছিল বলে পুলিশের একটি সূত্রের দাবি। যদিও তারা তা অস্বীকার করেছে।
রাতে আইসি এবং অন্য আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান কৃষ্ণনগরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কৃশানু রায়। তিনি বলেন, “দু’টি রাজনৈতিক দলের মিছিল চলাকালীন সমস্যা তৈরি হয়। একটি দলের কর্মী-সমর্থকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে, অস্ত্র নিয়ে তাড়া করে। পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।” দুই দলের মিছিল মুখোমুখি এল কী করে, তার সদুত্তর অবশ্য মেলেনি।