ঘোড়ার পিঠে ওসি। নিজস্ব চিত্র।
এক কালে বেলডাঙার সাহেব পুলিশকর্তারা ঘোড়ায় চেপেই এলাকা টহল দিতেন। এখন রাস্তাঘাট হয়েছে, পুলিশের জিপ সর্বত্র যেতে পারে। কিন্তু বর্ষার কাদামাটি ভরা রাস্তায় যেতে ঘোড়াই বেছে নিয়েছেন বর্তমান ওসি জামালউদ্দিন মণ্ডল।
অগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহ। বেলডাঙা থানায় একটা ঘোড়া দেখতে পাওয়া যায়। পরে জানা যায় বেলডাঙা থানার এক পুলিশ কর্তার আত্মীয় মহম্মদ শাহাজামাল সম্প্রতি কলকাতার রেস কোর্স এলাকা থেকে একটা ঘোড়া কিনে এনেছেন। সেই ঘোড়া চোখে ঠেকে যায় বর্তমান ওসি জামালউদ্দিন মণ্ডলের। তিনি ১৬ বছর আগে পুলিশের চাকরির ট্রেনিং এর সময় ব্যারাকপুরের লাটবাগানে ঘোড়া চাপায় অভ্যস্ত হন। তখন থেকেই তাঁর প্রথম পছন্দ ঘোড়া। কিন্তু তারপর ১৬ বছর চাকরি জীবনে এই সুযোগ মেলেনি। থানার সামনে ঘোড়া দেখে তিনি নিজের ইচ্ছার কথা শাহাজামাল কে বলেন। তারপর কয়েক দিন থানার মধ্যে ঘোড়ার সঙ্গে ভাব জমিয়ে উঠে পরেন পিঠে। তারপর থেকে রোজ সকালে নিয়ম করে বেলডাঙা পরিদর্শনে বার হন। সকাল থেকে বেলা ১১ টা পর্যন্ত তিনি বেলডাঙার বিভিন্ন গ্রাম পরিক্রমা করেন। তারসঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তিনি সম্প্রতি বেলডাঙা হিজুলি মাঠপাড়া এলাকায় বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। সেই প্রত্যন্ত গ্রামীন এলাকায় গাড়ির থেকে ঘোড়া আগে পৌঁছবে। তিনি হিজুলি গিয়েছিলেন ঘোড়ায় চড়ে। এ ছাড়া বেলডাঙা ১ বিডিও অফিস যাওয়া, কাপাসডাঙা, কাজিসাহা, দেবকুণ্ড, বেগুনবাড়ি এলাকায় তিনি ঘুরছেন ঘোড়ায় চেপে। বুধবার সকাল আটটা নাগাদ জামাল উদ্দিন মণ্ডল বার হলেন ঘোড়ায় চেপে। বাইরে প্রচুর মানুষ ভিড় জমিয়েছেন মস্ত ঘোড়ায় চেপে পুলিশ কর্তাকে দেখবেন বলে। তারপর তিনি লোহার রিঙে পা দিয়ে ঘোড়ায় উঠলেন। মুখে শব্দ করে ঘোড়া কে ডান দিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন গলার দড়ি টেনে। ঘোড়া, কর্তার নির্দেশ বুঝে প্রথমে বেলডাঙা রেল বাজার হয়ে পাঁচরাহা রেলগেট হয়ে বামে নজরুল পল্লির ভাঙা রাস্তা ধরে চললো বেলডাঙা দেবকুণ্ড। ভেসে উঠলো। জানলার ফাঁক দিয়ে পুরুষ দের থেকে মহিলাদের ভিড় বেশি দেখা গেল। ঘোড়া নিয়ে গত কয়েক দিন মেতেছে মানুষ। জামালউদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘‘শারীরিক সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। ঘোড়ায় চাপতে ভালই লাগছে।’’