— প্রতীকী চিত্র।
রাতে না-ঘুমিয়ে বিছানায় শুয়ে শুয়ে মোবাইলে গেম খেলছিলেন স্ত্রী। ওই রাগে তাঁকে খুন করে বসলেন স্বামী। এমনই অভিযোগকে কেন্দ্র করে শোরগোল মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা থানার বেলিয়া শ্যামপুর এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সার্জিনা খাতুন নামে ৩৫ বছরের এক যুবতীর। তার আগে পুলিশের কাছে তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে জবানবন্দি দেন ওই যুবতী। তিনি জানান, মোবাইলে ভিডিয়ো গেম খেলছিলেন বলে স্বামী তাঁকে মারধর করেছেন। ওই যুবতীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শ্বশুরবাড়ি এবং বাপের বাড়ির লোকজন একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগ করেছে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যদিও এখনও গ্রেফতারির কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর ১২ আগে পেশায় রাজমিস্ত্রি রাকেশ রওশনের সঙ্গে বিয়ে হয় সার্জিনার। দম্পতির নয় এবং পাঁচ বছরের দুই সন্তান রয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে নাকি মোবাইল গেমে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন সার্জিনা। রান্না করতে করতেও গেম খেলতেন। ঘুমোতে যাওয়ার আগেও মজে থাকতেন মোবাইলে গেমে। ওই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়শই অশান্তি হত। পুলিশি তদন্তে উঠে আসে সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত ভিডিয়ো গেম খেলছিলেন সার্জিনা। স্বামী তাঁকে মোবাইল রেখে দিতে বলায় দু’জনের কথা কাটাকাটি হয়। তার পরে মারধরের কোনও ঘটনা ঘটেছে কি না, তা অবশ্য তদন্তসাপেক্ষ।
মৃতার বাপেরবাড়ির দাবি, সত্য আড়ালের চেষ্টা করা হচ্ছে। সার্জিনাকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল। তাঁর বুকে, পাঁজরের নীচে সজোরে ঘুষি মারায় অজ্ঞান হয়ে পড়েন তিনি। পরে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার করানো হয়। সেখানে চিকিৎসকদের পরামর্শে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই মৃত্যু হয় ওই যুবতীর। মৃতার আত্মীয়া রাফিনা বিবি বলেন, ‘‘সামান্য কারণে আমার ননদের উপর অমানবিক অত্যাচার করা হত। মৃত্যুর আগে নিজেই সে কথা বলে গিয়েছে ও। রাকেশও তখন উপস্থিত ছিল।’’ যদিও মৃতার শাশুড়ি রিক্তা বিবি মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বউমা খুব জেদি ছিল। ছেলের কোনও দোষ ছিল না। খাটাখাটনি করে এসে রাতে ঘুমোতে গিয়েছিল। কিন্তু ঘুমের ব্যাঘাত ঘটছিল বলেই বৌমাকে মোবাইল বন্ধ করতে বলেছিল ছেলে। বৌমা কথা না শোনায় মোবাইল কেড়ে নিতে চায় ছেলে। তখনই কোনও ভাবে আঘাত লাগে বৌমার।’’