অভিযুক্ত সুশান্ত ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। ফাইল চিত্র।
বহরমপুরে নিহত কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরীর বাড়ি থেকে অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীর গ্রাম খনি বাথানির দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার। কিন্তু খনি বাথানি তো দূরের কথা, মালদহের ইংরেজবাজার শহরে নিহত ছাত্রীর বাড়ির উল্টো দিকে সুশান্তের পিসির বাড়িতেও গেল না মুর্শিদাবাদ থেকে যাওয়া এক অফিসার-সহ মোট চার জনের তদন্তকারী দলটি।
মঙ্গলবার বহরমপুরের পুলিশ মালদহের কালিয়াচকের রাজনগর এবং এয়ারভিউ কমপ্লেক্সে গেলেও তারা কেন সুশান্তের বাড়ির ধারেকাছে মাড়াল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন তুলেছেন সুশান্তের আত্মীয়েরাও। যদিও তদন্তকারীদের দাবি, এখনই সুশান্তের বাড়িতে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করছেন না তাঁরা।
সুতপার খুনের পর আট দিন কেটে গিয়েছে। অভিযুক্ত সুশান্ত ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, কাল, বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পেশ করা হতে পারে। আদালতে পেশের আগে এ দিন মালদহে গিয়েছিল বহরমপুরের পুলিশ। তাদের গন্তব্য ছিল কালিয়াচকের রাজনগর গ্রামে সুতপার বাড়ি। তারপর সুতপার বাবা স্বাধীন চৌধুরীকে ইংরেজবাজারের এয়ারভিউ কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তাঁরা। সুতপার বাবা, মা ও বোনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
সুতপাদের বাড়িতে ঘণ্টাখানেক ছিল পুলিশ। ওই বাড়ির উল্টো দিকেই সুশান্তর পিসি শান্তিরানি চৌধুরীর বাড়ি। কিন্তু শান্তিরানির বাড়ি তারা যায়নি। শান্তিরানি বলেন, “পুলিশ আমাদের বাড়িতে একবারও এল না। সুতপার সঙ্গে সুশান্তের সম্পর্কের বিষয়ে আমরা বলতে পারতাম। সুশান্তের সঙ্গে কী হয়েছে, সেই বিষয়েও পুলিশকে জানাতে পারতাম।” বহরমপুরের পুলিশের জেলায় যাওয়ার খবরে তটস্থ ছিল সুশান্তের খনি বাথানি গ্রামের পরিবারও। বাড়ির সামনে ভিড় করেছিলেন আত্মীয়রাও। যদিও শেষ পর্যন্ত পুলিশ সেখানে যায়নি। অভিযুক্তের আত্মীয় পম্পা চৌধুরী বলেন, “আমরা পুলিশকে তদন্তে সহযোগিতা করব। পুলিশ এলে আমরাও কিছু তথ্য দিতে পারতাম।” যদিও তদন্তকারীরা জানান, তদন্তে প্রয়োজন হলে পরে তাঁরা ফের সুশান্তের পরিবারের সঙ্গে
যোগাযোগ করবেন।
তবে খুনের প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সাক্ষীদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ-সহ একাধিক ভিডিয়ো থাকলেও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী অরিন্দম দাস বলেন, “অভিযুক্তকে সর্বোচ্চ সাজা দিতে সাক্ষীর প্রয়োজন। সাক্ষীর অভাবে সাজা কমেও যেতে পারে।” বহরমপুরের প্রবীণ আইনজীবী পীযূষ ঘোষের কথায়, “সাক্ষীর অভাবে বহু মামলা দিনের পর দিন পড়ে রয়েছে এমন নজিরও আছে।”
তবে ওই দিনের খুনের দৃশ্য পথচলতি অনেকে মোবাইলে ভিডিয়ো করে রেখেছিলেন। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তাঁদের শনাক্ত করে সাক্ষী সংগ্রহ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা, দাবি একটি সূত্রের।