শেখ শামিম।
দীর্ঘ এক সপ্তাহ অসুস্থতায় ভুগছে ৪০ দিনের শিশুপুত্র। তার চিকিৎসার জন্য তিন দিনের ছুটিতে এসেছিলেন বাড়িতে। চিকিৎসকের লেখা প্রেসক্রিপশন হাতে ছেলের জন্য ওষুধ কিনে বাড়ি ফেরার পথে পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হল এক যুবকের। তিনি নিজেও পেশায় এক জন পুলিশকর্মী ছিলেন। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার কালীগঞ্জ থানায় এলাকায়। মৃত পুলিশকর্মী তাঁর নিজের স্কুটিতে করে ওষুধ নিয়ে ফিরছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, দুর্ঘটনার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি গাড়িতে থাকা পুলিশকর্মীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়ার কালীগঞ্জ ব্লকের দেবগ্রাম পুলিশ ফাঁড়ির অন্তর্গত পাথরজনা গ্রামে বুধবার রাতে দুর্ঘটনাটি ঘটে। পাথরজনা গ্রামের বাসিন্দা পুলিশের কনস্টেবল শেখ শামিমের চার বছর হল বিয়ে হয়েছে। মাত্র ৪০ দিন আগে জন্ম হয়েছে একটি শিশুপুত্রের। বর্তমানে পুরুলিয়াতে কর্মরত রাজ্য পুলিশের এই কনস্টেবল শিশুপুত্রের অসুস্থতার জন্য ছুটি নিয়ে তিন দিনের জন্য বাড়ি এসেছিলেন। বুধবার রাতে শামিম স্কুটিতে করে ছেলের প্রেসক্রিপশন নিয়ে ওষুধ আনতে যান। বাড়ির ফেরার পথে কালীগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির টহলরত গাড়ি ধাক্কা দেয় ওই শামিমের গাড়িতে। দীর্ঘ ক্ষণ ঘটনাস্থলেই পড়ে ছিলেন শামিম। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতদেহ ময়নাতদন্ত জন্য কৃষ্ণনগর পুলিশ মর্গে পাঠানো ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় দেহ।
পুলিশকর্মীর পরিজনদের অভিযোগ, দীর্ঘ ক্ষণ দেহ পড়ে থাকলেও পুলিশ ফাঁড়ির গাড়িতে থাকা পুলিশকর্মীরা কোনও রকম ব্যবস্থা নেয়নি। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করার আগে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরেই তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়।
মৃত পুলিশকর্মীর আত্মীয় ওসমান আনসারি বলেন, “পুলিশ ফাঁড়ির গাড়ি যখন ধাক্কা দিল তখন যদি ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হত তা হলে হয়তো বেঁচে যেত। ধাক্কা দেওয়ার পর কী অমানবিক ভাবে তাঁরা পালিয়ে গেলেন সেটাই ভেবে অবাক হচ্ছি।” কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার এস অমরনাথ জানান, “দুর্ঘটনায় এক জনের দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু হয়েছে, গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”