হিসেবে চোখ। নিজস্ব চিত্র।
দু’ বছর পর হাল ফিরল ব্যবসায়ীদের লাল খাতার। অতিমারির জেরে গত দু’ বছর দিনটি একপ্রকার নিঃশব্দে কেটেছিল ব্যবসায়ীদের। বর্তমানে সংক্রমণ কমতে ফের চেনা ছন্দে ফিরল ‘হাল খাতা’। শুক্রবার সকাল থেকেই বহরমপুরের ছোট, বড় সব দোকানে পাওনা-গণ্ডা আদায় এবং নতুন খাতা তৈরির ব্যস্ততা চোখে পড়েছে।
ইদানিং ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটা শুরু হওয়ায় দোকানে ধার রাখার প্রবণতা কমেছে। তবে অনেক দোকানে ধারে কেনাকাটা এখনও চলে। মাসিক কিস্তিতে জামাকাপড়, টিভি, ফ্রিজ কিনতে পাওয়া যায়। সারা বছরের পাওনাগণ্ডা এই দিনেই আদায়ের চেষ্টা করেন ব্যবসায়ীরা। এ দিন গণেশ পুজো উপলক্ষে রীতিমতো কার্ড দিয়ে খদ্দেরকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়। সঙ্গে তাঁর কাছ থেকে বকেয়া আদায়ও করা হয় এই দিনেই। ব্যবসায়ীদের তরফে খদ্দেরকে মিষ্টিমুখ করানোও রীতি এই দিনে।
বহরমপুরের গোরাবাজারের ব্যবসায়ী সৌরভ সাহার ১১৬ বছরের পারিবারিক বস্ত্র ব্যবসা। তিনি বলেন, “করোনার জেরে মাঝের দু’ বছর বাদ দিলে কোনওদিন এই অনুষ্ঠানে ছেদ পড়েনি। আগে কৃষিকাজে যুক্ত ক্রেতাই বেশি ছিলেন। তাঁরা ফসল ওঠার পর তা বিক্রি করে পাওনা মেটাতেন এই সময়। এখন তো সকলে কিস্তিতেই পাওনা শোধ করেন।’’ তবে ধার-বাকি ছাড়াও অনেক দোকানে এই পুজো হয়। মিষ্টির প্যাকেট না দেওয়া হলেও লাড্ডু, সঙ্গে ঠান্ডা পানীয়, কুলফি কিংবা শরবতের আয়োজন থাকেই। বৈদ্যুতিন সামগ্রী বিক্রেতা শঙ্কু মণ্ডল বলেন, “লকডাউনের সময়টুকু বাদ দিলে এ বছর আগের মতোই মানুষ দোকানে আসছেন। সেটা ব্যবসার পক্ষেও ভাল লক্ষণ।” ইদানিং অবশ্য দোকানগুলিতে লাল রঙের খাতার কদর কমেছে। তার বদলে বেড়েছে কম্পিউটারের ব্যবহার। কাদাই এলাকার এক বিক্রেতা রাজু মণ্ডল বলেন, “খাতা তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। হিসেবেও গন্ডগোল হয়। তাই কম্পিউটার ব্যবহার।’’