হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ সোমবার। নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসার গাফিলতিতে এক তরুণীর মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে সোমবার সকালে ধুন্ধুমার শুরু হয় রানাঘাটের এক নার্সিংহোমে। ইট ছোড়া থেকে শুরু করে জাতীয় সড়ক অবরোধ—কিছুই বাদ যায়নি।
চন্দ্রা পাল(২৭) নামে ওই রোগিনীর মৃত্যুর পর উত্তেজিত জনতা কোর্টমোড়ের কাছে ওই নার্সিংহোমে দফায় দফায় ইট-পাটকেল ছোড়ে। নার্সিংহোমের একাধিক জানলার কাচ ভেঙে যায়। এর পর হামলাকারীরা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। ফলে সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন জাতীয় সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তার দু’ধারে সারি দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে যায়। আটকে পড়েন অফিসযাত্রী, স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারা। সকাল এগারোটা থেকে আধ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অবরোধ চলে। তার পর পুলিশের হস্তক্ষেপে তা তুলে নেওয়া হয়। মৃতদেহ কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
নার্সিংহোমের ম্যানেজার প্রণব বিশ্বাস বলেন, “চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি হয়নি। প্রসবের জন্য ওই তরুণী ভর্তি হন। সিজারের পরেই তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাঁকে আইসিসিইউ-এ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সব রকম চেষ্টা সত্ত্বেও বাঁচানো যায়নি।’’ পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, গোলমাল হলেও এ ব্যাপারে কোনও পক্ষ কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ চন্দ্রাকে ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে রাতে সে পুত্রসন্তানের জন্ম দেয়। সোমবার সকালে নার্সিংহোমের তরফ থেকে জানানো হয়, চন্দ্রা মারা গিয়েছে। তবে সদ্যোজাত সন্তান সুস্থ রয়েছে। সকালে মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে তাঁর পরিজনেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। কিছু স্থানীয় লোক তাঁদের সঙ্গে যোগ দেয়। শুরু হয় তাণ্ডব।
রানাঘাট ১ নম্বর ব্লকের আনুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের লোকনাথনগরে চন্দ্রাদের বাড়ি। তাঁর স্বামী তারক পাল বলেন, “আমার বছর আটেকের একটি মেয়ে রয়েছে। তার পর এই ছেলে। কোনওদিন ও বুঝতেও পারবে না মায়ের স্নেহ কাকে বলে। চিকিৎসার গাফিলতিতেই আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। চন্দ্রার কোনও রোগ ছিল না। আজকালকার দিনে সন্তানের জন্ম দিয়ে মৃত্যুর কথা ভাবা যায় না। আমি ওদের শাস্তি চাইছি।’’ তাঁর দাবি, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ কখনও বলছেন, চন্দ্রার ফুসফুসে জল জমেছিল। আবার কখনও বলছেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।