প্রতিমাকে পড়ছে রংয়ের প্রলেপ। বহরমপুরে তোলা ছবি। ৫ অক্টোবর, ২০২৩। ছবি গৌতম প্রামাণিক।
মোবাইলের সাধারণ বার্তা থেকে ফেসবুকের দেওয়াল। আশঙ্কার বার্তা সর্বত্র। পুজোয় ভ্রমণ হবে তো? সংবাদ পত্রের পাতা থেকে দূরদর্শনের চিত্র সব জায়গায় বৃষ্টির ছবি ও সংবাদ দেখা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে সিকিমের চুংথাং থেকে সিংটাম এলাকার ছবি, সেখানে তীব্র জলের স্রোত। তিস্তা নদীর ঘোলা জলের ঘূর্ণিতে ভেসে আসছে দেহ, জামাকাপড়, বাসন, গ্যাসের সিলিন্ডার। সিকিমে প্রবল ক্ষয়ক্ষতির পর সমতলে বন্যা পরিস্তিতি তৈরি হয় তিস্তা নদীর দু’দিকে। সিকিম থেকে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, কালিম্পং সহ বিস্তীর্ণ অংশের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর ছবি আছড়ে পরছে বিভিন্ন সমাজ মাধ্যমে।
এই দেখে আতঙ্কিত সকলে। বাঙালি বরাবর ভ্রমণ পিপাসু। দুর্গা পুজোর আগেই বাড়ি থেকে বার হয় ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। দুর্গা পুজো শুরু হতে আর মাত্র কয়েক দিন। তারপরই বাদ্যি বেজে উঠবে। সেখানে উত্তরবঙ্গ, দার্জিলিং, কালিম্পং, সিকিম অন্যতম গন্তব্য। কিন্তু সেই ভ্রমণ হবে তো? বিভিন্ন প্রশ্নে উপচে পড়ছে ফেসবুকের দেওয়াল।
প্রশ্নগুলো এই রকম, ‘এত বৃষ্টি ২০০০ সালের (বন্যার) স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছে।’ এক জায়গায় লেখা, ‘গ্যাংটকে যারা খারাপ অবস্থায় আছেন তারা আমাদের সাহায্য নিতে পারেন।’ কয়েকটি ফোন নম্বর দেওয়া রয়েছে। আবার ‘তিস্তা রিভার রঙপো’ লিখে নদীর ভয়াবহ ছবি। ‘আমরা পরশু (শুত্রুবার) এনজেপি টু কালিম্পং যাব,তার পরের দিন ওখান থেকে দার্জিলিং যাওয়ার প্ল্যান আছে। এখন যাওয়া কী ঠিক হবে? থ্যাংক্স ইন অ্যাডভান্স।’ এক জন ছবি পোস্ট করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে সিকিমের ঘটনার পর জলপাইগুড়ি থেকে প্রশাসনের পক্ষে তিস্তা, জলঢাকা নদীগুলির পার্শ্ববর্তী মানুষদের মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে। একজন লিখেছেন, গুড মর্নিং কালিম্পং, স্টে সেফ। একটা ভ্রমণ সহকারী ইউটিউব চ্যানেলের পক্ষে ফেসবুকে লেখা হয়েছে, কয়েক দিন আগে উত্তর সিকিম গিয়েছিলাম।.... যারা পুজোতে সিকিম যাবেন ভেবেছিলেন তাদের বেড়ানো এখন অনিশ্চিত, আরও অনিশ্চিত সিকিমের পর্যটনের সঙ্গে যারা যুক্ত মানুষদের রুজিরুটি। ফেসবুকে লেখা রয়েছে, ‘যারা এই মুহুর্তে দার্জিলিং এ আছো তারা প্লিস দার্জিলিঙের আবহাওয়ার আপডেট দাও।’
বহরমপুরের বাসিন্দা লাজবন্তী পাল বলেন, “আমাদের ট্রেনের টিকিট করা আছে। ১৫ অক্টোবর থেকে ২০ অক্টোবর। আমাদের দার্জিলিং যাওয়ার কথা। কী হবে বুঝতে পারছি না।” বহরমপুরের সমিত সাহার কথায়, “পুজোয় উত্তর সিকিম যাওয়ার কথা। টিকিট, হোটেল, গাড়ি সব বলা আছে। কিন্তু যেতে পারবো কি না জানি না।”
মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিসের সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, “সিকিম, উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু গ্রামের ছবি দেখলাম। রাস্তা ভেঙেছে, ব্রিজ ভেঙেছে। পুজো আর কয়েক দিন। তার মধ্যে ওসব মেরামতি হবে কিনা জানিনা।’’ তিনি বলেন, ‘‘সব কিছু দ্রুত মেরামত না কার হলে ভ্রমণে তার প্রভাব পড়বে। পুজোয় অনেকেই বাইরে যান। তাঁরা আশঙ্কায় রয়েছেন।”