‘কোন পথে যে চলি’, প্রশ্ন শহরের

পুরনো শহর, আনাচ কানাচে তার লুকিয়ে আছে অজস্র অসুবিধা। তারই খোঁজ নিল আনন্দবাজার শতবর্ষ ধরে বহরমপুর শহরের ফুটপাথ দখল করে গড়ে উঠেছে দোকান ও বাজার। ফুটপাথ জবরদখল করার পরে তারা রাজপথ জবরদখল করতে শুরু করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৯ ০২:১১
Share:

ফাইল চিত্র।

সারা বহরমপুর শহর যেন মহাভারতের অভিমুন্যের চক্রব্যূহ। বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় পা দিলে আর রেহাই নেই। যানজটে জেরবার দশা। বাইরে থেকে শহরে ঢুকলে বের হওয়ার পথ খুঁজে পাওয়া দায়। যানজটে পথ হারিয়ে যাওয়া বহরমপুর শহরের মানুষ মুক্তির পথ খুঁজছেন সেই ২১ বছর আগে থেকে। অবশেষে পুলিশ ও প্রশাসনের বদান্যতায় মাস খানেক থেকে সেই পথের আপাতত কিছুটা খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।

Advertisement

শতবর্ষ ধরে বহরমপুর শহরের ফুটপাথ দখল করে গড়ে উঠেছে দোকান ও বাজার। ফুটপাথ জবরদখল করার পরে তারা রাজপথ জবরদখল করতে শুরু করেছে। ফলে আরও সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে বহরমপুর শহরে রাস্তা। তার উপর নিত্যদিন যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে প্রাচীন শহরের অপ্রশস্ত রাস্তায় চলাচল দুর্বিষহ হয় উঠেছে। ১৯৯৮ সালে বহরমপুরের পুরপ্রধান হয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর অন্যতম পরামর্শদাতা আকবর কবীর। অধীর-আকবর যুগলবন্দির উদ্যোগে শহরের রাস্তা জবরদখল মুক্ত করতে সেই সময় পথে নামানো হয়েছিল হল্লাগাড়ি। তাতে অনেকটা কাজ দিয়েছিল। তার পরে পুরপ্রধানের পদ থেকে আকবর কবীরকে অপসারিত করা হয়। হল্লাগাড়ির চাকাও রুদ্ধ হয়ে পড়ে। তার পর ২১ বছর ধরে আরও অনেক রাস্তা জবরদখল করে দোকান-বাজার গজিয়ে উঠেছে।

যানজট মুক্ত করার দাবি জানিয়ে বিগত ২১ বছরে বিভিন্ন নাগরিক সংস্থার পক্ষ থেকে পুরসভার কাছে কয়েক ডজন আবেদনপত্র জমা পড়ে। প্রতি বারই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, ‘‘পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে বহরমপুর শহরের রাস্তা জবরদখল মুক্ত করা হবে। যানজট মুক্ত হবে শহর।’’ প্রতিশ্রুতির কানাকড়িও পূরণ হয়নি বিগত ২১ বছরে। অবশেষে মাস খানেক আগে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) দেবতোষ মণ্ডলের সভাপতিত্বে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও পুলিশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বৈঠক হয়। তার পরে রাস্তা জবরদখল মুক্ত করার অভিযান শুরু করে পুলিশ। তারও আগে লালদিঘি ও ব্যারাক স্কোয়ার এলাকায় ‘ওয়ান ওয়ে’ শুরু হয়।

Advertisement

জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শহরের উত্তর প্রান্ত থেকে শুরু করে খাগড়া, কল্পনার মোড়, জলট্যাঙ্ক মোড়, লালদিঘি হয়ে দক্ষিণ প্রান্তের ওয়াইএমএ মাঠ পর্যন্ত জবরদখল উচ্ছেদ করা হয়েছে। বাকি আছে দক্ষিণ প্রান্তের রাজা মিঞার মোড় ও জজ কোর্টের মোড় পর্যন্ত এলাকা। সে গুলোও ধাপ ধাপে করা হবে।’’

উত্তর থেকে শুরু দক্ষিণের ওয়াইএমএ মাঠ পর্যন্ত জবরদখল মুক্ত হলেও শহরের মধ্যবর্তী এলাকার সমবায়িকার মোড় থেকে মোহনা বাস টার্মিনাস পর্যন্ত অন্যতম ব্যস্ত রাস্তায় কিন্তু হাত পড়েনি। তা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছেন ইতিমধ্যে উচ্ছেদ হওয়া দোকান মালিকেরা। অতিরিক্ত জেলাশাসক দেবতোষ মণ্ডল বলেন, ‘‘দফায় দফায় উচ্ছেদ অভিযান চলছে। ওই এলাকাও জবরদখল মুক্ত করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement