Devendra Fadnavis

দিল্লিতে বৈঠকে দেবেন্দ্র, শিন্দের দাবি বিহার মডেল

সূত্রের মতে, আজ দিল্লি এসে প্রথমে স্পিকার ওম বিড়লার মেয়ের বিয়ের প্রীতিভোজে যোগ দেন দেবেন্দ্র। তার পর বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা-সহ অন্য নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৫
Share:

দেবেন্দ্র ফডণবীস। —ফাইল চিত্র।

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করতে আজ রাতে দিল্লিতে পা দিলেন মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস। যে ভাবে শিবসেনা মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য অনড় রয়েছে, সে ক্ষেত্রে জোটের জটিলতা এড়াতে মরাঠাভূমে ‘বিহার মডেল’ অনুসরণ করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে খবর।

Advertisement

সূত্রের মতে, আজ দিল্লি এসে প্রথমে স্পিকার ওম বিড়লার মেয়ের বিয়ের প্রীতিভোজে যোগ দেন দেবেন্দ্র। তার পর বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা-সহ অন্য নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘এখানে সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছি। রাজনীতি করতে নয়।’’ বিজেপি সূত্রের খবর, গভীর রাত পর্যন্ত দেবেন্দ্রর সঙ্গে মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে শাহের। দেবেন্দ্রকে মুখ্যমন্ত্রী করা না হলে তাঁকে বড় দায়িত্ব দিয়ে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে দেবেন্দ্রকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে জোটে ভাঙন ধরার সম্ভাবনা রয়েছে কি না, সেই বিষয়টিও নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়েছে। সূত্রের খবর, রাতেই দেবেন্দ্রের মুম্বইয়ে ফেরার কথা। আগামিকাল খোদ শাহ মুম্বই যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে জোট শরিক তিন দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।

এ দিকে আগামিকাল মহারাষ্ট্র বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার মধ্যেই শপথ গ্রহণ সেরে ফেলার পক্ষপাতী ছিলেন বিজেপি নেতারা। মুখ্যমন্ত্রী পদ ঘিরে টানাপড়েনের ফলে শপথগ্রহণ না হলে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। যদিও বিজেপির একাংশের দাবি, মহারাষ্ট্রেই অতীতে একাধিক বার বিধানসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে শপথ নেওয়ার নজির রয়েছে। যেমন ২০০৪ সালে ১৯ অক্টোবর মহারাষ্ট্রের দশম বিধানসভার মেয়াদ শেষ হয়েছিল। কিন্তু ১১তম বিধানসভার নতুন মুখ্যমন্ত্রী শপথ নেন ১ নভেম্বর।

Advertisement

দু’বছর আগে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনায় ভাঙন ধরিয়ে বিক্ষুব্ধ একনাথ শিন্দের সাহায্যে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়েন দেবেন্দ্র। কিন্তু উপমুখ্যমন্ত্রী হয়েই খুশি থাকতে হয় দেবেন্দ্রকে। এ যাত্রায় মহারাষ্ট্রে মহায্যুতি জোটের বিপুল জয়ের প্রধান কারিগর হওয়া সত্ত্বেও যত সময় গড়াচ্ছে, ততই দেবেন্দ্রর মুখ্যমন্ত্রী হওয়া নিয়ে জটিলতা বাড়ছে। জোটের আর এক শরিক অজিত পওয়ারের এনসিপি দেবেন্দ্রকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সমর্থন করার কথা ঘোষণা করলেও শিবসেনার অবস্থান চিন্তায় ফেলেছে বিজেপিকে। আজ শিবসেনা নেতা রাজু ওয়াঘমাড়ে বলেন, ‘‘বিজেপি মহারাষ্ট্রে ১৩৩টি আসন জিতলেও, মনে রাখতে হবে সেই ভোটে শিবসেনা ও এনসিপি-র অংশ রয়েছে। বিশেষ করে একনাথ শিন্দের জনপ্রিয়তা প্রায় ৩০-৪০ শতাংশ ভোট টানতে সাহায্য করেছে। ক্রিকেটে যেমন ক্যাপ্টেন এক থাকে, তেমনই আমাদেরও ক্যাপ্টেন পরিবর্তন করা ঠিক হবে না।’’

মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়ার বিষয়ে আপত্তির কথা ইতিমধ্যেই ঘরোয়া ভাবে বিজেপি নেতৃত্বকে জানিয়ে রেখেছে শিন্দে শিবির। এ ক্ষেত্রে শিবসেনার পক্ষ থেকে বিহার মডেলের উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিহারে জেডিইউ ও বিজেপি জোটের সরকার রয়েছে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী পদ রয়েছে ছোট শরিক জেডিইউয়ের কাছেই। শিন্দে শিবিরের বক্তব্য়, তবে মহারাষ্ট্রে সেই মডেল অনুসরণ করা হবে না কেন? তবে সূত্রের খবর, আড়াই বছর এক নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী করে পরবর্তী আড়াই বছর অন্য কাউকে মুখ্য়মন্ত্রী করার কথাও ভাবা হচ্ছে। দু’জনকে উপমুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে।

মহারাষ্ট্রে আশাতীত ভাল ফলের পিছনে দেবেন্দ্র ফডণবীসের ভূমিকা যে প্রধান, সেটা স্পষ্ট। ফলে মুখ্যমন্ত্রী পদে দেবেন্দ্র যে যোগ্যতম ব্যক্তি সে কথা মেনে নিচ্ছেন বিজেপি নেতারাও। আরএসএস নেতৃত্বও চান দেবেন্দ্র মুখ্যমন্ত্রী হোন। অন্য় দিকে এ দিন ফের বিতর্কিত আইপিএস রশ্মি শুক্লকে মহারাষ্ট্র পুলিশের ডিজি পদে নিয়োগ করা হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগের জেরে তাঁকে বদলি করেছিল নির্বাচন কমিশন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement