সিপিএমের মিছিলে দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তেহট্টে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএম যে দুর্নীতিকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রধান হাতিয়ার করতে চাইছে, বৃহস্পতিবার কার্যত সেটা ফের স্পষ্ট করে দিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। চাপড়ায় পুলিশ তাঁদের কর্মীদের গাড়ি আটকে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। যদিও তা অস্বীকার করেছে চাপড়া থানার পুলিশ। তবে স্থানীয় সূত্রের খবর, চাপড়ায় ঢোকার দু’টি মোড়ে পুলিশ গাড়ি আটকালেও কর্মীরা হেঁটে সভাস্থলে এসেছিলেন।
নদিয়ায় বিশেষ করে তেহট্ট ও পলাশিপাড়া বিধানসভা এলাকায় নিয়োগ-দুর্নীতি একটা নির্ণায়ক বিষয় হতে পারে বলে আন্দাজ করছেন সিপিএম নেতারা। কারণ ওই দুই কেন্দ্রের বিধায়ক, যথাক্রমে তাপস সাহা ও মানিক ভট্টাচার্যের নাম দুর্নাতির অভিযোগে জড়িয়েছে। দ্বিতীয় জন বর্তমানে জেল হেফাজতে। প্রথন জনের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে রাজ্যের রাজ্যের দুর্নীতিদমন শাখা। তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত দু’জন গ্রেফতারও হয়েছে। এ দিন বিকেলে তেহট্টের পিডব্লিউডি মোড় থেকে চাতরপাড়া ও থানার সামনে দিয়ে বাজার হয়ে হাউলিয়া পার্ক মোড়ে শেষ হয় সিপিএমের মিছিল। সেখানে জনসভায় সেলিমের কটাক্ষ, “এক মানিক জেলে আর এক মানিক এলাকার বিধায়ক তাপস সাহা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।” যা শুনে পরে বিধায়ক তাপস সাহা পাল্টা বলেন, “ভুলভাল কথা বলছে, আমি কোথাও পালাইনি।”
তেহট্টের আগে চাপড়ায় কর্মিসভা করেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সেলিম। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত চাপড়ায় বর্তমানে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে সিপিএম। ২০১৩ সালে সিপিএম নেতা খুনের ঘটনার পর থেকে সেখানে প্রায় ১১৫টি পরিবার গ্রামছাড়া ছিল। প্রায় ন’বছর পর সম্প্রতি গ্রামের লোকজনকে নিয়ে মিছিল করেছে সিপিএম। সেই সঙ্গে আরও বেশ কয়েকটি গ্রামে কয়েক বছর পর স্থানীয়দের নিয়ে মিছিল করতে পেরেছে তারা। সীমান্ত সংলগ্ন সেই চাপড়ায় কর্মিসভা করতে এসে প্রথম থেকেই সেলিম ছিলেন আক্রমণাত্মক। পাচারের জন্য বিজেপি-তৃণমূল উভয়কেই দায়ী করে তাঁর দাবি, রাজ্য পুলিশ ও বিএসএফের ‘সাঁট’ ছাড়া পাচার সম্ভব নয়।। যে ‘পাচারকারী’ বিএসএফের গুলিতে যারা মারা যাচ্ছে, তারা আসলে ভারবাহী মুটের কাজ করেন। আসল লোকেরা কালীঘাট, গাজিয়াবাদ, অরাঙ্গাবাদ, বীরভূমে বসে পাচার করে।
সেলিমের কটাক্ষ, “ছেলেমেয়ারা চাকরি পাচ্ছে না। উন্নয়নের নামে শুধু নীল-সাদা রং হয়েছে!”