অধীরের সভায় দলবদল তৃণমূল কর্মীদের। ছবি: সংগৃহীত।
পঞ্চায়েত ভোটের তিন দিন আগেও মুর্শিদাবাদ জেলায় শাসক দলে ভাঙন অব্যাহত। বুধবার ডোমকল পুরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান প্রদীপ চাকী-সহ অন্তত ৬০০ জন তৃণমূল নেতা-কর্মী লোকসভার কংগ্রেস নেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর উপস্থিতিতে দলবদল করেছেন বলে দাবি। অন্য দিকে, অধীরের হাত থেকে পতাকা নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে বড়ঞাতে প্রায় ১৫০ জন কংগ্রেসে শামিল হয়েছেন বলে দাবি।
বুধবারই কলকাতা হাই কোর্ট পঞ্চায়েত ভোটের দফা বাড়ানোর জন্য অধীরের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে অধীর বুধবার বহরমপুরে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘নিরাপত্তার কারণেই দফা বাড়ানোর দাবি করেছিলাম। ভোটের আগে শাসক দলের হয়ে পুলিশ এবং তৃণমূলের হার্মাদ বাহিনী কংগ্রেস কর্মীদের ভয় দেখাচ্ছে। থানায় ডেকে পাঠানো হচ্ছে। সন্ত্রস্ত করে রাখতে চাইছে। কখনও শুনেছেন জেলরক্ষীরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নেয়? অথচ, গতকাল নির্বাচন কমিশন যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে পঞ্চায়েত ভোটে ৪০০ জন জেলের সিপাই (কারারক্ষী বাহিনী) জঙ্গিপুরে মোতায়েন করা হয়েছে।’’
পৌঁছনোর পরেও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বসিয়ে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে অধীর বলেন, ‘‘পথে নয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বুথে চাই।’’ অধীরের দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পর তাদের পরিচালনা করবেন সেই পুলিশ অবজার্ভারদের অন্য রাজ্য থেকে আনতে হবে। যে রাজ্যের ডিজি ১৬ জনের মৃত্যুর পরেও বলেন ‘সব কিছু ঠিকঠাক চলছে’, সেই পুলিশের উপর আমাদের ভরসা নেই।’’ অধীরের অভিযোগ প্রসঙ্গে বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘অধীর ভোট বন্ধ করার জন্য হাই কোর্ট দৌড়েছিলেন। সেখানে মুখ পুড়িয়েছেন। তাই এ সব খুচরো ছ্যাবলামো করে ভোটের পরে নিজেদের হারের সাফাই খোঁজার চেষ্টা করছেন।’’
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার বেলডাঙায় ৩০০ তৃণমূল কর্মী এবং রেজিনগরে যুব তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি-সহ ২০০ জন অধীরের হাত থেকে কংগ্রেসের পতাকা গ্রহণ করে দলে যোগদান করেছিলেন বলে ‘হাত’ শিবিবের দাবি। মুর্শিদাবাদ জেলায় পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার আগে থেকেই চলছে দলবদলের পালা! আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শাসকদলের ‘ঘর’ ভেঙে যোগদানের ঘটনা ঘটছে কংগ্রেসে। গত কয়েক মাসে কান্দি, শমসেরগঞ্জ, খড়গ্রাম, বড়ঞা-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদানের ঘটনা দেখা গিয়েছে।