ট্রেনে ওঠা প্র্যাকটিশ: রাত পোহালেই চলবে ট্রেন। তার আগে বহরমপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
রাত পোহালেই টানা সাত মাস স্তব্ধ থাকার পর শিয়ালদহ-লালগোলা শাখায় গড়াবে রেল। ট্রেনই এই এলাকার অনেকের জীবনের জীবনরেখা। আনলক পর্বের শুরু থেকে যাতায়াতে ছাড়পত্র পেলেও রেল না চলায় রোগী দেখানো থেকে জরুরি প্রয়োজনে ঘুরপথে জেলার বাইরে যেতে হচ্ছিল জেলাবাসীকে। রেল চলার খবরে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি রেলযাত্রী থেকে হকার এমনকি রোগীপক্ষ সকলেই।
তবে আগের মতো আপ ডাউন মিলিয়ে ১৬ জোড়া লোকাল ট্রেনের বদলে পূর্ব রেলের এই শাখায় করোনা বিধি মেনে দু-দফায় মোট পাঁচ জোড়া ট্রেন যাতায়াত করবে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। তাদের মধ্যে আপডাউন মিলিয়ে চার জোড়া ট্রেন লালগোলা রানাঘাট রুটে আর এক জোড়া ট্রেন লালগোলা-শিয়ালদহ রুটে যাতায়াত করবে। তবে এই মুহূর্তে লালগোলা-শিয়ালদহ শাখায় কোন এক্সপ্রেস ট্রেন যাতায়াত করবে না। বদলে তিনটি মেমু ট্রেন যাতায়াত করবে যার মধ্যে আপডাউন মিলিয়ে দুটি মেনু লালগোলা-রানাঘাট রুটে যাতায়াত করবে অন্য একটি মেমুর গন্তব্য লালগোলা থেকে শিয়ালদহ।
দিনের প্রথম ট্রেনটি লালগোলা থেকে ভোর ৪টে ৫০মিনিটে ছেড়ে আসবে। ওই ট্রেনটির শিয়ালদহ পৌঁছানোর কথা সকাল ৯টা ৫৭মিনিটে। একই দিনে বিকেল ৪টে ৪০মিনিটে শিয়ালদহ থেকে ছেড়ে এসে ওইদিন রাত এগারোটা নাগাদ লালগোলা পৌঁছবে আপ লালগোলা প্যাসেঞ্জার। তবে খাগড়া ঘাট স্টেশন দিয়ে ইতিমধ্যে কাটোয়া-আজিমগঞ্জ শাখায় হাওড়া ডিভিসনের দুটি এক্সপ্রেস ট্রেন যাতায়াত করছে অক্টোবরের ২০ তারিখ থেকে। ওই শাখায় নতুন কোন লোকাল ট্রেন আগামী সপ্তাহ থেকে চলবে না বলেই রেল সূত্রে জানা যায়।
যদিও মাস দুয়েক আগে থেকেই রেলের তরফে লোকাল ট্রেন চলাচলের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট। সেইমত বেশ কিছু স্টেশনে ঝাড়পোঁছ শুরু হয়েছিল। স্টেশন চত্বরে আঁকা হয়েছিল দূরত্ব মেপে সুরক্ষা বলয়ও। লকডাউনের ফাঁকে বেশ কিছু স্টেশন সংস্করণ হয়েছে কিছু স্টেশনে এখনও সংস্করণের কাজ শেষ হয়নি। তারই মাঝে রেল চলবে নতুন সময় মেনে। বড় স্টেশনগুলিতে স্যানিটাইজ়েশন থেকে মাস্কের ব্যবহার এমনকি দূরত্ববিধির ক্ষেত্রে নজরদারি থাকবে বলে রেল সূত্রে জানা যায়।
মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কর্মাসের যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, “জেলায় রেলযাত্রীর যা চাপ থাকে তাতে শিয়ালদহ লালগোলা শাখায় ১৬ জোড়া ট্রেনের বদলে দু’জোড়া ট্রেন চললে করোনা সংক্রমণ কমার বদলে বেড়ে যাবে বলে মনে হয়। এক্ষেত্রে আরও ট্রেন চালানো উচিত ছিল।” একই কথা জানিয়েছেন নিত্য যাত্রী পলাশ দাসও। তিনি বলেন, “ট্রেন চললে ভিড়ে যাতায়াতে কতটা সুরক্ষিত থাকবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। বেশি ট্রেন চললে সেই অসুবিধা কিছুটা কমত।” হকাররা ট্রেনে ওঠার সুযোগ পাবেন কি না, সে বিষয়ে কোনও নির্দেশ না থাকায় তাদের রেলযাত্রা নিয়ে অনিশ্চিত হকারদের পাশাপাশি স্টেশন কর্তৃপক্ষও।