— প্রতীকী চিত্র।
পাশাপাশি থাকেন তাঁরা, সম্পর্কে দাদু-নাতি। সেই নাতিকে ঠাট্টা করে বিয়ে হবে না বলেছিলেন দাদু। তাতেই হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে দাদুকে মারধর করার অভিযোগ নাতির বিরুদ্ধে। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় প্রৌঢ়ের। পুলিশ খুনের অভিযোগে নাতিকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাটি নদিয়ার করিমপুরের।
পড়শি সম্পর্কে তাঁরা দাদু এবং নাতি। যুবকের বাড়ির উঠোনে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন প্রৌঢ়। হঠাৎ ওঠে যুবকের বিয়ের প্রসঙ্গ। ঠাট্টার ছলে প্রৌঢ় তখন বলেন, ‘‘তোর আর বিয়ে হবে না!’’ এ কথা শুনে বেজায় চটে যান যুবক। বেশ কয়েকটি ঘুষি মারেন প্রৌঢ়কে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন প্রৌঢ়। তড়িঘড়ি উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকেরা শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল স্থানান্তরিত করেন প্রৌঢ়কে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে স্থানান্তর করানো হয় কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চার দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মঙ্গলবার মৃত্যু হল ৫৬ বছরের প্রৌঢ়ের। মৃত ব্যক্তির নাম আকমান মণ্ডল। খুনের চেষ্টার অভিযোগে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে যুবক রসময় প্রামাণিককে। পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। যদিও মৃতের পরিবারের অভিযোগ, পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে প্রৌঢ়কে। দেহের ময়নাতদন্তের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, নদিয়ার করিমপুর থানা এলাকার আকমান এবং রসময় প্রতিবেশী। আকমানকে দাদু ডাকতেন রসময়। দীর্ঘ দিন তাঁদের দু’জনের সুসম্পর্ক। শনিবার দুপুরে অভিযুক্ত রসময়ের বাড়িতে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন আকমান। আড্ডার মাঝে যুবকের বয়স পঁয়ত্রিশ পেরিয়ে যাওয়ায় ‘আর বিয়ে হবে না’ বলে মন্তব্য করেন প্রৌঢ়। শুরু হয় কথা কাটাকাটি। আচমকাই ওই যুবক আকমানকে ঘুষি মারতে থাকেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন প্রৌঢ়। পরিবারের লোকজন তাঁকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তর করেন। ঘটনার পর থেকে আর জ্ঞান ফেরেনি প্রৌঢ়ের, এমনটাই দাবি পরিবারের। চার দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মঙ্গলবার মৃত্যু হয় প্রৌঢ়ের। প্রাথমিক ভাবে খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল যুবককে। তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মৃতের পরিবারের সদস্য বুলবুল মণ্ডল বলেন, ‘‘রসময় এলাকায় বিভিন্ন অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। ইচ্ছাকৃত ভাবে কাকাকে খুন করেছেন।’’ অভিযুক্তের দাদা গোবর্ধন প্রামাণিক বলেন, ‘‘দু’জনের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক চলছিল। তার পর কী হয়েছে বলতে পারব না।’’ তেহট্ট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শুভতোষ সরকার বলেন, ‘‘পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক ভেবে খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল। প্রৌঢ়ের মৃত্যুর পর খুনের ধারা যুক্ত করে তদন্ত হবে।’’