জনজোয়ার: বেপরোয়া ভিড়ে সাঙের শোভাযাত্রার ছবি ফিরল নবদ্বীপে গৌরাঙ্গিনী মাতার বিসর্জনেও। শনিবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।
আগমেশ্বরী আর মহিষখাগী কালী। তার পর কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী ভাসান। একই রকম বেপরোয়া ভিড়ে সাঙের শোভাযাত্রার ছবি ফিরল নবদ্বীপে গৌরাঙ্গিনী মাতার বিসর্জনেও।
মুখে মাস্ক নয় ভেঁপু, হাতে মোবাইল। ঢাকের তালে কোমর দুলিয়ে জনতা শামিল হল গৌরাঙ্গিনীর শোভাযাত্রায়। রাসের এক মাত্র সাঙের প্রতিমার বিসর্জন নিয়ে টালবাহানার পর বেলা ৩টে নাগাদ গৌরাঙ্গিনী যখন পথে নামে, তখন আর শোভাযাত্রার উপরে উদ্যোক্তাদের কার্যত কোনও নিয়ন্ত্রণই নেই।
এ বারে নবদ্বীপের রাসে আড়ং নিষিদ্ধ। ফলে শনিবার শহরে শুধু মাত্র গৌরাঙ্গিনীরই বিসর্জন হওয়ার কথা ছিল। তাই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় জমতে শুরু করে। প্রথামাফিক ওই প্রতিমা বরাবরই দুপুর ১টা নাগাদ পথে নামে। সেই হিসাবেই লোকজন জড়ো হতে শুরু করেছিল। কিন্তু প্রশাসনের সবুজ সঙ্কেত না পাওয়ায় প্রতীক্ষার প্রহর গড়াতে থাকে। অন্য দিকে সাঙে যাওয়ার জন্য বাঁধাছাঁদা করে প্রস্তুত হওয়ায় খবর মুখে-মুখে ছড়িয়ে পড়তেও দেরি হয়নি।
শেষমেশ যখন বেহারাবাহিত হয়ে গৌরাঙ্গিনী প্রতিমা পথে নামল, তখন কোথায় কোভিড বিধি মানা সংক্রান্ত আদালতের নির্দেশ আর কোথায় উদ্যোক্তাদের প্রতিশ্রুতি। সাং ঘিরে চারদিকে জনজোয়ার। যোগনাথতলা থেকে যাত্রা শুরু করে পোড়ামা তলা, ঢপওয়ালির মোড়, রাধাবাজার হয়ে প্রতিমা যত এগিয়েছে, ততই বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ ভিড় জমিয়েছে শোভাযাত্রায়। বেশির ভাগের মুখেই মাস্ক ছিল না, দূরত্ব বিধির তো প্রশ্নই নেই। জগদ্ধাত্রী নিয়ে কৃষ্ণনগরের মতো গৌরাঙ্গিনী নিয়ে নবদ্বীপের ‘আবেগ’ও সুবিদিত।
কয়েকশো পুলিশ এবং র্যাফ-কে সাক্ষী রেখে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে ফাঁসিতলা গঙ্গায় যখন গৌরাঙ্গিনী বিসর্জন হল তখন বিকেল সাড়ে ৪টে। হেমন্তের বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা আসি-আসি। বিসর্জনের ঘাটে কোভিড বিধি উড়িয়ে এই জনসমাগম প্রসঙ্গে নবদ্বীপ পুর প্রশাসক পর্ষদের সদস্য শচীন্দ্র বসাকের বক্তব্য, “উদ্যোক্তারা যখাসম্ভব আইন মানার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মানুষের আবেগ তাঁরা নিয়ন্ত্রণ করবেন কী করে?”