বহরমপুরের বাসিন্দা, তবে কাজের সূত্রে কলকাতায় থাকি। তা এ বার যা গরম পড়েছে, হাঁসফাঁস অবস্থা। বৌ-বাচ্চা নিয়ে তাই তিন দিনের জন্য দার্জিলিং ঘুরে আসার প্ল্যান করেছিলাম।
তা যাব বললেই তো হয় না, শেষতক বুধবার রাতের ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস ধরে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে এসে পৌঁছলাম। শিলিগুড়ি থেকে পাঙ্খাবাড়ি হয়ে দার্জিলিং যাওয়ার রাস্তা দু’টো দেখলাম বন্ধ। ড্রাইভার আমাদের মিরিক হয়ে ঘুরিয়ে নিয়ে গেল।
প্রায় দেড়টা বেজে গিয়েছে। দার্জিলিঙ ঘুম স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছতে পারিনি তখনও। সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে। রাস্তায় একটুও জল নেই। খাবার তো দূরের কথা। প্রায় আড়াই ঘন্টা গাড়ির মধ্যে ঠায় বসে থাকতে হল। কী আর করা, অগত্যা গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করলাম। শহরের কাছাকাছি এসে বুঝলাম পাহাড় জ্বলছে। হোটেলে ফোন করতেই ম্যানেজার জানালেন, খুবব খারাপ অবস্থা শহরের। সটান জানিয়ে দিলেন, হোটেলে যেন না আসি।
কী আর করা, দার্জিলিং স্টেশনে বসে থাকলাম। ইচ্ছে ছিল হোটেলে পৌঁছে দুপুরে খাওয়ার। কিন্তু যাবতীয় পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। সঙ্গে থাকা বিস্কুট-স্ন্যাক্স-কেক খেয়েই কোনওরকমে চলল। সন্ধ্যায় প্রায় জোর করেই হোটেলে পৌঁছলাম। রাস্তায় দেখলাম গাড়িগুলি কঙ্কাল-সার অবস্থা। আগুন তখনও ধিকিধিকি জ্বলছে।
শুক্রবার সকাল থেকে হোটেলের বাইরে পা রাখিনি। ঘরবন্দি হয়ে রয়েছি। বনধের চেহারা, দোকান খোলেনি। শুনশান রাস্তাঘাট। এখন ফেরা নিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছে। তবে ঠিক করেছি রবিবারের আগে কিছুতেই ফিরব না।
ব্যাঙ্ক কর্মী, বহরমপুর