প্রতীকী ছবি
এক সময় ফরিদপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছিল এলাকার হাজার হাজার মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা। ২৪ ঘণ্টাই সেখানে স্বাস্থ্য পরিষেবা মিলত বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। আর বর্তমানে সেখানে ভরসা বলতে একজন নার্স আর একজন ফার্মাসিস্ট।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এখনও প্রতিদিন দেড়শো থেকে দু’শো রোগী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন। তা সামাল দিচ্ছেন ওই দু’জন। তাঁরা বলছেন, ‘‘গ্রামবাসীরা সকাল থেকে এসে দাঁড়িয়ে থাকেন হাসপাতালে। তাঁদের তো আর খালি হাতে ফেরানো যায় না। সাধ্যমতো চেষ্টা করছি পরিষেবা দেওয়ার।’’
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসকের ঘাটতি থাকার জন্যই ওই হাসপাতালে এখন চিকিৎসক দেওয়া সম্ভব নয়। তবে নতুন করে চিকিৎসক নিয়োগ হলে সেখানে পাঠানো হবে।
বছর কয়েক আগেও এই হাসপাতালে আবাসনেই থাকতেন চিকিৎসক। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা মিলত সেখানে। দূর-দূরান্তের গ্রাম থেকেও রোগীরা ফরিদপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসতেন বলে জানা গিয়েছে স্থানীয় সূত্রে। এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘‘সেই সময় হাসপাতাল চত্বরে একটা অন্যরকম পরিবেশ ছিল। চিকিৎসকরা থাকতেন হাসপাতাল চত্বরের মধ্যেই। সাধারণ মানুষ সব রকমের পরিষেবা এখান থেকেই পেত। কিন্তু ধীরে ধীরে চিকিৎসকরা হাসপাতাল ছাড়লেন। তারপর থেকে লাটে উঠতে লাগল হাসপাতালের পরিষেবা।’’ স্থানীয়দের একাংশের দাবি, এলাকার কিছু দুষ্কৃতীর জন্যই চিকিৎসকরা এলাকা ছেড়ে চলে যান। না হলে হাসপাতালের এমন দুরবস্থা হত না। বছরখানেক আগেও হাসপাতালে একজন চিকিৎসক আসতেন মাঝেমধ্যে। তাঁর মৃত্যুর পর থেকে নতুন করে কেউ আসেননি। স্থানীয়দের দুর্ভোগেরও শেষ নেই।গত প্রায় এক বছর ধরে স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালাচ্ছেন একজন নার্স। কিছুদিন আগে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছেন একজন ফার্মাসিস্ট। দু’জনে মিলে কোনওক্রমে জিইয়ে রেখেছেন পরিষেবা। তবে জ্বর-জারি হলেই বাসিন্দারা স্বাস্থ্যকেন্দ্র যান। বড় ধরনের অসুখে তাঁদের সাদিখাঁরদিয়াড় গ্রামীণ হাসপাতাল বা ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে দৌড়তে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা বাপি মণ্ডল বলেন, ‘‘জরুরি পরিষেবা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মিলছে না। সামান্য কাটাছেঁড়াতেও দৌড়তে হচ্ছে দূরবর্তী হাসপাতালে। টানা এক বছর ধরে চিকিৎসক নেই। তবু স্বাস্থ্য দফতরের কোনও হেলদোল নেই।’’ জলঙ্গির বিএমওএইচ অমর ঘোষ বলেন, ‘‘চিকিৎসকের ঘাটতি রয়েছে। নতুন করে নিয়োগ শুরু হলে চিকিৎসক দেওয়া হবে।’’