ফাইল চিত্র।
দিন দুই আগে পোস্টার পড়েছিল ‘আমরা দাদার সঙ্গে আছি’। কৌতূহলটা দানা বেঁধেছিল রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী সেই ‘ভাই’দের নিয়ে। শনিবার রাত থেকে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় 'দাদার' সেই 'ভাইদের' চেহারা স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।
দিল্লির দিকে পা বাড়ানো শুভেন্দু অধিকারীর সেই অনুগামী কুলের মুল হোতা যে জেলা সভাধিপতি মোশারফ হোসেন ওরফে মধু পোস্টারের নিচে 'মধু ফ্যান ক্লাব'ই তা সামনে এনে দিয়েছে। ফেসবুক কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে শুভেন্দুর গেরুয়া পাগড়ি কিম্বা নামাবলী জড়ানো মুখের ছবিতে 'দাদা তুমি এগিয়ে চলো আমরা তোমার সঙ্গে আছি' ছবির নীচে মোশারফের ছবিও দেখা যাচ্ছে বেশ কয়েক জায়গায়। প্রশ্ন উঠেছে শুভেন্দুর হাত ধরে জেলা নেতা হয়ে ওঠা একদা কংগ্রেসের ডাকাবুকো নেতা মোশারফও কি তৃণমূল ঘুরে আবার বিজেপির দিকে পা বাড়িয়েছেন?
মধু বলছে, ‘‘আমি রাজনৈতিক গুরু হিসেবে শুভেন্দু অধিকারীকেই মানি। তাঁর সঙ্গেই থাকতে চাই। তবে দল বদলাব কি-না তা সময় বলবে।’’ মোশারফ ঘনিষ্ঠ জেলা পরিষদ সদস্য সঞ্জয় হালদারও ধরিয়ে দিচ্ছেন, "মধুদার বহু অনুগামী এখন তাকিয়ে আছে দাদার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার দিকে। তিনি যা বলবেন তা-ই হবে।’’
যা থেকে স্পষ্ট মধু ফ্যান ক্লাবের আড়ালে মোশারফের ঘনিষ্ঠ একাধিক তৃণমূল নেতা কর্মী এখন শুভেন্দুর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় বুক বেঁধে আছেন। মোশারফের অন্য এক ছায়া সঙ্গী রেবাজুল সেখ প্রায় একই সুরে বলছেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় যা জানানো তা আমরা জানিয়ে দিয়েছি। এবার রাস্তাতেও ওই ফ্লেক্স ব্যানার টাঙাব এবং জেনে রাখুন শুভেন্দু-মোশারফ যে দিকে আমরাও সেদিকে।’’
জেলা পর্যবেক্ষক হওয়ার পরে, একদা কংগ্রেসের গড় এই জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও পুরসভা এবং অবশেষে জেলা পরিষদও ভাঙিয়ে লোক টেনে ছিলেন শুভেন্দু। দল ভাঙানোর সেই খেলায় শুভেন্দুর ওস্তাদ ছিলেন মোশারফ। তারই পুরষ্কার স্বরুপ জেলা পরিষদ দখলের পরে সভাধিপতির পদও গিয়েছিল মধুর দখলে। মধুর বাড়বাড়ন্ত সেই থেকেই। তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘জেলা থেকে শুভেন্দু বিদায়ের পরে মোশারফ এখন কোণঠাসা। দলীয় কর্মসূচিতে তাকে আর দেখা যায় না। শুভেন্দু ছাড়া তাঁর গতি নেই।’’