এই ঘরই ভাড়া নিয়েছিল নাসিরুল্লা। নিজস্ব চিত্র
এ-ওর গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে, মুখের ওপর ছড়িয়ে আছে সদ্য ট্রেন থেকে নামা নিউজপ্রিন্টের ম ম গন্ধমাখা দিনের কাগজ। চোখ গেঁথে আছে একটা ছবির দিকে। ‘তুই দেখেছিস লোকটাকে?’
—কী বলছিস, মাথা নিচু করে পাড়ার রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেত...রোজ দেখতাম তো!
এটা যদি স্টেশন চত্বরে চাক বাঁধা কৌতূহল হয়, তা হলে বাসস্ট্যান্ড কিংবা বাজারে খবরের কাগজের স্টলে কাগজ ঘিরে ভিড়টা একে অন্যের কাঁধ উজিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়তে চাইছে!
ঢাকার হোলি আর্টিজেন বেকারি রেস্তরাঁয় বিস্ফোরণের দায়ে বাংলাদেশের শীর্ষ আদালত যার ফাঁসির হুকুম দিয়েছে, ২২ জনের মৃত্যু ঘটিয়েও যে মৌলবাদী হাসিমুখে বলে বেড়াচ্ছে, ‘কোনও অনুতাপ নেই!’ সেই হাতকাটা নাসিরুল্লার ছবি দেখতে গত দু’দিন ধরে কাগজ নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে। চায়ের দোকান থেকে গেরস্তের বাড়ি— বিষ্যুদবারের কাগজখানা এক বার হাতে পেতে বেলডাঙা যেন মরিয়া। কারণ আর কিছুই নয়, হাতকাটা সেই নাসিরুল্লাকে এক বার চাক্ষুষ করা। বছর দুয়েকের জন্য বেলডাঙা বাজারে আনসার শেখের বাড়ি সে ভাড়া নিয়েছিল যে! তবে, নাসিরুল্লাকে পড়শিরা চিনতেন, স্বল্পবাক ধর্মপ্রাণ দর্জি হিসেবেই। পরিচয়টা সামনে এল, ২০১৪ সালে অষ্টমীর সন্ধ্যায় বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা যখন নাসিরুল্লার সন্ধানে বেলডাঙা এল তার আগেই সে পাততাড়ি গুটিয়েছে। সেই থেকে আনসার শেখের বাড়ি তালা-বন্ধ। আনসার নিজেও বলছেন, ‘‘বাব্বা জোর বেঁচে গিয়েছি, না জেনে কাকে ভাড়া দিয়েছিলাম!’’
সেই নাসিরুল্লাকেই শেষতক গ্রেফতার করে বাংলাদেশ পুলিশ। বিচারে তার ফাঁসি হয়।