জলঙ্গির চরে ধুইয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রতিমা। কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র
ক্রমশ বেড়েই চলেছে জলঙ্গি নদীর দূষণ। তার উপর উৎসবের দিন শয়ে শয়ে প্রতিমা নিরঞ্জনের ফলে সেই দূষণের মাত্রা বেড়ে যায় আরও অনেকটাই। এবার তাই জলঙ্গিকে দূষণমুক্ত রাখতে নদীতে বিসর্জন না দিয়ে লক্ষ্মী প্রতিমা জল দিয়ে গলিয়ে দেওয়া হল। পাশাপাশি, প্রতিমার সাজ-সজ্জা থেকে শুরু করে কাপড়, বিচুলি, কাঠামো রেখে দেওয়া হল নদীর পাড়ে। যাতে পুরসভার পক্ষ থেকে সেগুলি সহজে সংগ্রহ করা সম্ভব হয়।
২৪ বছর ধরে কৃষ্ণনগরের উকিলপাড়ার মোড়ে লক্ষ্মীপুজো করে আসছে ‘ক্লাব দ্য টাইটানিক’। বর্তমানে নতুন প্রজন্ম দায়িত্ব নিয়ে পুজোর আয়োজন করে আসছেন। তাঁরাই এ বার সিদ্ধান্ত নেন যে দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিমা জলঙ্গির জলে বিসর্জন দেবেন না। তাঁরা প্রতিমা জলঙ্গি নদীর পাড়ে জল দিয়ে গলিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। তাঁদের এই পরিকল্পনার কথা জানার পর এগিয়ে আসেন ‘সেভ জলঙ্গি’-র সদস্যরা। তাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে জলঙ্গি নদীর দূষণ রোধ করা জন্য নানা ধরনের কাজ করে আসছেন। তাঁরাই মূলত পাম্প এবং পাইপের ব্যবস্থা করেন। সেই মতো রবিবার ‘ক্লাব দ্য টাইটানিক’এর প্রতিমা নিয়ে আসা হয় জলঙ্গি নদীর ধারে কদমতলা ঘাটে। সেখানেই প্রতিমাটি গলিয়ে দেওয়া হয়। ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা দিব্যজ্যোতি ভট্টাচার্য বলেন, “আসলে আমরা শহরের সমস্ত বারোয়ারি ও ক্লাবগুলিকে বার্তা দিতে চাইলাম। কারণ, জলঙ্গি নদী যে ভাবে ভয়ঙ্কর দূষণের মুখে, তাতে এ নদীকে বাঁচাতে গেলে আমাদের নিজেদের কিছু দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমরা চাই নদী বাঁচাতে। আমরা চাই সকলেই প্রতিমা নদীতে বিসর্জন দেওয়া বন্ধ করুক।”
আর দীর্ঘ দিন ধরে জলঙ্গি নদী নিয়ে কাজ করে আসা ‘সেভ জলঙ্গি’র সভাপতি যতন রায়চৌধুরী বলেন, “এটা একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল। আমরা চাই নদীকে বাঁচাতে সকলেই এই প্রদক্ষেপ করুন।”