ছেলের অভিযোগ, শ্মশান পাড়ে মাটিতে পুঁতে দেওয়া বাবার মৃতদেহ গায়েব হয়ে গিয়েছে রাতের অন্ধকারে। সুতির আমুহা গ্রাম এলাকায় মানুষের মনে এ নিয়ে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সুতি থানার পুলিশও গিয়েছে আমুহা শ্মশানে। গায়েব হওয়া মৃতের ছেলের সঙ্গে কথা বলে তাঁর জবানবন্দিও নিয়েছে। কিন্তু ঘটনার কিনারা হয়নি।মৃতদেহ কারা, কী জন্য মাটি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছে সে রহস্য এখনও কাটেনি।
ফরাক্কার এসডিপিও কৌশিক বসাক বলেন, ‘‘সুতি থানা থেকে ঘটনার কথা জেনেছি। লিখিত অভিযোগ হয়নি।’’ আমুহা শ্মশানে আশপাশের ৪টি গ্রামের মানুষজন মৃতদেহ দাহ করেন। ৫৫১ টাকা দিয়ে দাহ করার পর পঞ্চায়েতের শ্মশান কমিটি একটি শংসাপত্র দেয়। সেটা দেখিয়ে পঞ্চায়েত থেকে মৃত্যুর শংসাপত্র নিতে হয়।
কমিটির সদস্য ফুলচাঁদ দাস বলেন, “এই সব গ্রামের অনেকেই দেহ দাহ করতে পারেন না কাঠের অভাবে। তাই টাকা মিটিয়ে নিয়ম মতো মুখাগ্নি সেরে পাশেই সরকারি জমিতে গর্ত খুঁড়ে পুঁতে দেন দেহ। সম্প্রতি তিন তিনটি মৃতদেহ এই ভাবে পুঁতে দেওয়া হয়। পরে দেখা যায় এই তিনটি দেহ মাটি খুঁড়ে তুলে নেওয়া হয়েছে। মানিক দাস ও বিকাশ দাস ছাড়াও তৃতীয় দেহটি পাশের কোনও গ্রামের। স্বভাবতই গ্রামে এ নিয়ে শোরগোল পড়েছে। ৮-৯ মাস আগেও একই ভাবে পোঁতা দেহ চুরির ঘটনা ঘটেছিল এখানে। তখন দু’চার দিন রাত জেগে আমরা শ্মশান পাহারাও দিই। তারপর আর চুরির ঘটনা ঘটেনি।”
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নিজের কদমতলা গ্রামের বাড়িতেই মারা যান মানিক চন্দ্র দাস (৭৭)। তাঁর ছেলে সুশান্ত দাস বলেন, “মুখাগ্নি সেরে মৃতদেহ পুঁতে দেওয়া হয় পাশেই। সেখানে ফেলে রাখা ছিল বাঁশের খাঁচা ও একটি লেপ।সোমবার হঠাৎই খবর পাই বাবার পোঁতা দেহ খোঁড়া হয়েছে। আমরা গিয়ে দেখি দেহ নেই। পরে আরও নিশ্চিত হতে সেই মাটি গভীর পর্যন্ত খোঁড়া হয়। লেপটি মেলে কিন্তু বাবার দেহটি নেই। পুলিশ এসে দেখে যায়। পরে থানায় ফোন করলে তারা কিছু জানাতে পারেননি।”
গ্রামের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য অর্জুন মণ্ডল বলেন, “এই তিনটি দেহই নয়, এর আগেও এ ভাবে দেহ চুরি হয়েছে এখানে। কারা, কেন চুরি করছে তাও পরিষ্কার নয়। ভেবেছিলাম জন্তু, জানোয়ার এসে দেহ তুলছে। কিন্তু তার কোনও চিহ্ন কোথাও নেই।”
বিকাশ দাস নামে এক জনের মৃতদেহও চুরি হয়েছে। তাঁদের কদমতলার বাড়িতে তাঁর স্ত্রী ও নাবালক ছেলেমেয়েরা রয়েছেন বাড়িতে। স্ত্রী বলছেন, “শুনেছি মৃতদেহ মাটি খুঁড়ে চুরি হয়েছে।”