—নিজস্ব চিত্র।
চুনসমৃদ্ধ পাথুরে মাটি। সমুদ্রতল থেকে অন্ততপক্ষে দু’হাজার ফুট উচ্চতা। আর চাই কনকনে ঠান্ডা আবহাওয়া। অন্য দিকে, বার্ষিক গড় উষ্ণতা অন্ততপক্ষে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও বেশি। মাটিতে বালির পরিমাণ বেশি এবং অপেক্ষাকৃত উষ্ণ আবহাওয়া আদর্শ। প্রথমটি জাফরান, দ্বিতীয়টি খেজুর। কিন্তু ভূগোলকে বোকা বানিয়ে দু’টি ফসল পাশাপাশি চাষ হচ্ছে এ বঙ্গের মুর্শিদাবাদে।
বাগানের প্রত্যেকটি গাছ থেকে পাওয়া যাবে কয়েক কেজি করে খেজুর। গাছের রস থেকে উৎকৃষ্ট খেজুরের গুড় তৈরি হয়। জাফরান গাছ থেকে পাওয়া বহুমূল্য কেশরের পরিমাণও হবে বেশ কয়েক গ্রাম। এই শীতে এক সঙ্গেই পাওয়া যাবে জাফরান এবং নলেন গুড়। দীর্ঘ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার স্কুল শিক্ষক রূপেশ দাস পাশাপাশি দেশি খেজুর আর কাশ্মীরি জাফরান ফলিয়ে তাক লাগিয়ে দিচ্ছেন।
নেশায় জাফরান ‘কৃষক’ পেশায় শিক্ষক রূপেশ জানাচ্ছেন, আবহাওয়া সম্পর্কে সচেতনতা এবং গাছগাছড়া সম্পর্কে তথ্য থাকলেই কেশর চাষ করা যেতে পারে নিজের বাড়ির বাগানে বা টবে, তা সে কাশ্মীরই হোক বা বেলডাঙার একফালি বাগান। তিনি বলছেন, ‘‘১২ গ্রাম মতো কেশর চারা পেলেই ঠিক মতো চাষ হতে পারে। তার পরে সেই গাছে ফুলও আসতে পারে অনায়াসে। তবে যত্ন করতে হবে নিজের সন্তানের মতোই।’’ মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার কাছাড়িপাড়া এলাকার বাসিন্দা রূপেশ দাসের নেশাই বিভিন্ন ব্যতিক্রমী গাছপালা লাগানো। গরমের সময় আপেল চাষের আগ্রহে হিমাচল প্রদেশ থেকে তিনটি প্রজাতির ১০-১২টি আপেল গাছের চারা নিয়ে এসে নিজের দেড় কাঠার বাগানে পুঁতেছিলেন। তাতে ভাল ফল মেলে। এ বার আপেল চাষের পর নিজের বাড়িতে কেশর চাষ করেছেন। মুর্শিদাবাদের মাটিতে আপেল চাষের পর সফল ভাবে কেশর চাষ করতে পেরে খুশি রূপেশ। আগামী দিনে আরও বেশি মানুষকে বহুমূল্য কেশর চাষে উৎসাহিত করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন তিনি। বেলডাঙার মাটিতে কেশর চাষ করে নতুন দিশা দেখাচ্ছেন মাস্টারমশাই।