Murder

Murshidabad Murder: লকআপে অস্থির হয়ে উঠছে সুশান্ত, দু’দিন কাটলেও দেখা করতে এলেন না বাড়ির কেউ

রাতে সে ঘুমোয়নি। আপাতত তাকে রাখা হয়েছে সদর থানার ফাঁকা মহিলা লক আপে। মঙ্গলবার রাতে রুটি তরকারি দেওয়া হলেও তা সে মুখে তোলেনি।

Advertisement

বিদ্যুৎ মৈত্র

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২২ ০৬:০৬
Share:

ফাইল চিত্র।

সারা রাত বহরমপুর সদর থানার লকআপের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পায়চারি করে কাটিয়েছে সুশান্ত চৌধুরী। শহরের প্রাণকেন্দ্রে তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী সুতপা চৌধুরীকে সোমবার কুপিয়ে খুন করার পরে সেই রাতেই ধরা পড়ে যায় সে। তার পর প্রথম দিকে বেশ বেপরোয়া মনোভাব থাকলেও, আস্তে আস্তে তার মধ্যে অস্থিরতা এসেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। সূত্রের দাবি, সে কারণেই মঙ্গলবার রাতে সে ঘুমোয়নি। আপাতত তাকে রাখা হয়েছে সদর থানার ফাঁকা মহিলা লক আপে। মঙ্গলবার রাতে রুটি তরকারি দেওয়া হলেও তা সে মুখে তোলেনি। চা-ও খেয়েছে কোনও মতে মুখে তোলার মতো করে। তবে পুলিশ সূত্রের খবর, সে পরে খেয়েছে। বুধবার দুপুরে সে প্রথমে গারদের দরজায় পা তুলে খানিক বিশ্রাম নেয়, তার পরে মেঝেতে হাতের উপর মাথা রেখে কিছু ক্ষণ ঘুমোয়।

Advertisement

দু’দিন কেটে গেল। এ দিনও বাড়ি থেকে কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে আসেনি। আসেনি কোনও পরিচিতও। লকআপের সামনে তার উপর বিশেষ নজরদারির জন্য তিন জন সশস্ত্র পুলিশ প্রহরী রয়েছে। সকাল থেকে দফায় দফায় মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) সুবিমল পাল সহ উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসারেরা ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। জেলায় এসেছে সিআইডি-র চার সদস্যের ফিঙ্গার প্রিন্ট বিশেষজ্ঞের একটি দল। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই বিশেষজ্ঞ দল সুশান্তর কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা ছুরি, ব্যাগ, জামায় হাতের ছাপের ছবি নিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকেও কিছু নমুনা সংগ্রহ করতে ফরেন্সিক দলের জেলায় আসার কথা শোনা গেলেও পুলিশের বিশ্বস্ত সূত্রের দাবি, এখনই তার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজনে জেলায় এলে গোরাবাজার এলাকার শহিদ সূর্য সেন রোডের ওই ঘটনাস্থল তারা যেতে পারেন বলে সূত্রের দাবি। আদালতের নির্দেশ মতো দশ দিনের পুলিশ হেফাজতের মধ্যেই ধৃতকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করবে বহরমপুর থানার পুলিশ।

তবে সুশান্ত জেরায় পুলিশকে সহযোগিতা করছে বলেই দাবি তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের। সূত্রের দাবি, জেরায় সে পুলিশকে খুনের কথাও স্বীকার করেছে। সে জানিয়েছে সুতপার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও শেষ দিকে সুশান্তকে এড়িয়েই চলত সুতপা। সুতপার সঙ্গে আর কারও সম্পর্ক রয়েছে কি না, তা জানতে চেয়েও বারবার ব্যর্থ হয় বলে সুশান্ত জেরায় দাবি করেছে। জেরায় সে বলেছে, ফোন করলে, মেসেজ করলে সুতপা তার কোনও উত্তর দিত না। সেটাই সুতপার উপর তার রাগের মূল কারণ বলে জেরায় সে জানিয়েছে বলে পুলিশের দাবি।

Advertisement

তবে বহরমপুর শহরের সঙ্গে সে যে ভাল মতো পরিচিত, তার প্রমাণ মিলেছে। বহরমপুরের লালদিঘির কাছের একটি দোকানে সে ‘গার্ল-ফ্রেন্ডের’ সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেছে বলেও ২৮ মার্চ ফেসবুকে দাবি করেছে। ২ মে খুনের তিন দিন আগে সে বহরমপুরে এসেছিল। ওই এলাকায় চায়ের দোকানে বসে চা-ও খেয়েছে বলে সূত্রের দাবি। সুতপা কখন কোথায় যেত, কখন মেসে ফিরত এই সবই সে আড়াল থেকে খোঁজ রেখেছিল। ওই রাস্তাটিতে বেশ কিছু সিসিটিভি রয়েছে, পুলিশ সেগুলো ভাল করে খতিয়ে দেখছে। বহরমপুরে কার কার সঙ্গে সুশান্তের যোগাযোগ ছিল, এই তিন দিন সে কোথায় ছিল, তা অবশ্য এখনও জানা যায়নি বলে সূত্রের খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement