মাঠেঘাটে কিংবা উন্মুক্ত জায়গায় শৌচকর্ম নয়— এমন প্রচার চলছে দীর্ঘ দিন ধরেই। তার পরেও বদভ্যাস হোক কিংবা বাধ্য হয়ে কিছু লোকজন সেখানে যেতেন। যাতে সেখানে কেউ শৌচকর্ম করতে না পারে সেই জন্য পরিত্যক্ত সরকারি জমিতে এ বার ফলের বাগান তৈরি করতে চলছে রঘুনাথগঞ্জ ১ ব্লক। দফরপুর গ্রাম থেকেই শুরু হল এই ‘মুক্তি’ কর্মসূচির। রঘুনাথগঞ্জ ১ বিডিও মাসুদুর রহমানের দাবি, মুর্শিদাবাদ জেলায় রঘুনাথগঞ্জেই প্রথম এমন প্রকল্প শুরু হল।
দফরপুরের হালদারপল্লি লাগোয়া ভাগীরথীর পাড়। সরকারি জমি। একসময় কিছু গাছও ছিল সেখানে। সে সব উধাও হয়ে এখন স্রেফ ঝোপ-জঙ্গল। ফলে এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের কাছে সেটা হয়ে উঠেছিল ‘শৌচালয়’। ইতিমধ্যেই শৌচমুক্ত গ্রাম পঞ্চায়েত হিসেবে ঘোষিত হয়েছে দফরপুর। কিন্তু সেখানে যাওয়া একেবারেই বন্ধ করা যায়নি
বিডিও জানান, ওই সরকারি জমির জঙ্গল কেটে গড়ে তোলা হচ্ছে ফলের বাগান। সেখানে আম, লিচু, কাঁঠাল-সহ বিভিন্ন ধরণের ফলের গাছ লাগানো হয়েছে। সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শৌচমুক্ত টিম, স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও গ্রাম পঞ্চায়েতকে নিয়ে কমিটিও গড়ে দেওয়া হয়েছে। গাছগুলি বড় হলে তার থেকে যা আয় হবে তা পাবে গ্রাম পঞ্চায়েত। এরপরে রানিনগর, কানুপুর-সহ সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতেই সরকারি জমিতে ফলের গাছ লাগানো হবে।
দফরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্মল বাংলা মিশনের দায়িত্বে আছেন গ্রাম পঞ্চায়েত কর্মী ভুবনমোহন মণ্ডল। তিনি বলছেন, “বাড়িতে শৌচাগার থাকলেও বহু লোক মাঠে যাচ্ছেন। তা রুখতে এই পদক্ষেপ খুব কাজে দেবে।’’
এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সেলিম শেখ বলছেন, “মুক্তি প্রকল্পের কারণে মানুষেপ বদভ্যাস বদলাবে। পঞ্চায়েতেরও আয় বাড়বে।”
‘মুক্তি বাগান’ দেখভালের দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সভাপতি লতিকা হালদার বলছেন, ‘‘গাছগুলি বাড়লে এলাকার পরিবেশটাও ভাল হবে। মানুষের অভ্যেসও বদলাবে। আর তা হলেই মুক্তির হাত ধরেই মুক্তি মিলবে সকলেরই।’’