প্রতীকী ছবি
সিএএ, এনপিআর এবং এনআরসি বিরোধী প্রস্তাব পাশ করল শান্তিপুর পুরসভা। সোমবার পুরসভার সাধারণ সভায় এই প্রস্তাব গৃহীত হয়। তৃণমূল কাউন্সিলরদের পাশাপাশি পুরসভার এক মাত্র সিপিএম কাউন্সিলরও ওই প্রস্তাব সমর্থন করেছেন। এর আগে, গত শনিবার গ্রেটার হায়দরাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন দেশে প্রথম এ ধরনের প্রস্তাব পাশ করায়।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় জন পঞ্জি (এনপিআর) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) বিরুদ্ধে আগেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। সেই পদক্ষেপকে সমর্থন করেই এ দিন শান্তিপুর পুরসভায় প্রস্তাব পাশ করা হয়। মোট ২৪ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২৩ জন সভায় উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সকলেই এই প্রস্তাব সমর্থন করেছেন। এক তৃণমূল কাউন্সিলর অসুস্থ থাকায় সভায় আসতে পারেননি। বিজেপির কোনও কাউন্সিলর না-থাকায় বাধাও আসেনি। তবে এই প্রস্তাবের কোনও আইনি প্রভাব যে নেই এবং তা যে বস্তুত নৈতিক অবস্থানের কথা স্পষ্ট করছে, শান্তিপুর পুরসভা সূত্রে তা জানানো হয়েছে।
এ দিনের সাধারণ সভায় গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, “কেন্দ্রীয় সরকারের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, ২০১৯ এবং প্রস্তাবিত জাতীয় নাগরিক পঞ্জি ও জাতীয় জন পঞ্জি দেশের পক্ষে বিপজ্জনক বলেই এই সভা মনে করে। দেশের গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষ ভারতীয় সংবিধানকে ভেঙে দিয়ে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের প্রচেষ্টাকে এই সভা ধিক্কার জানাচ্ছে। দেশের বহুত্ববাদের ঐতিহ্য যা বহুবিধ ভাষা, ধর্ম, জাতিগত সত্ত্বার বৈচিত্র্যময় ঐক্যের কাঠামো যাকে গণতন্ত্রের মুখোশধারী গরিষ্ঠতাবাদী স্বৈরাচারী শক্তি ধ্বংস করতে চাইছে এই সভা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।”
শান্তিপুর পুরসভার ২৪ জন কাউন্সিলারের মধ্যে সিপিএমের এক জন। আর এক জন বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হিসেবে পুরভোটে জিতে এলেও পরে তৃণমূলে যোগ দেন। বাকি সব কাউন্সিলরই তৃণমূলের। পুরপ্রধান অজয় দে সভায় প্রস্তাবটি আনেন। পরে তিনি বলেন, “দেশে ভেদাভেদ সৃষ্টিকারী আইনের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার যে ভূমিকা নিয়েছে, আমরা তাকে পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।” এক মাত্র সিপিএম কাউন্সিলর তথা দলের শান্তিপুর এরিয়া কমিটির সম্পাদক সৌমেন মাহাতো বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার যে জনবিরোধী আইন চালু করতে চাইছে তা সংবিধান বিরোধী। তাই পুরসভা যে প্রস্তাব এনেছে তা আমি সমর্থন জানিয়েছি। আমাদের দল আগেই দাবি করেছে যে এই কালা কানুন প্রত্যাহার করতে হবে।”
তবে বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অশোক চক্রবর্তী দাবি করেন, “এনআরসি-র কোনও প্রস্তাবই নেই, এটা প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন। সুতরাং তা নিয়ে প্রস্তাব গ্রহণ করাও অপ্রাসঙ্গিক। ওঁরা আসলে কল্পিত এনআরসি-র জুজু দেখিয়ে সংখ্যালঘু ভোট টানতে চাইছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।”