প্রতীকী ছবি।
অন্য বছর এমন সময় শহর জুড়ে রাস্তার ধারে ছোট ছোট বাজির দোকান বসে যেত। লোকজন বাজি কিনতে সে সব দোকানে ভিড় জমাতেন। এবারে সে ছবি উধাও হয়ে গিয়েছে। এবারে শুধু আলো ও মোমবাতি বিক্রি হচ্ছে। সৌজন্যে কলকাতা হাইকোর্টের বাজি বিক্রি ও পোড়ানো বন্ধের নির্দেশিকা।
বহরমপুরের ব্যবসায়ীর জানাচ্ছেন, বরাবরই কালীপুজোয় রকমারি আলো, মোমবাতির পাশাপাশি বাজি বিক্রি করে আসছি। কিন্তু এবারে হাইকোর্টের নির্দেশের জেরে বাজি বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ রেখেছি। শুধুমাত্র রকমারি আলো ও মোমবাতির খরিদ্দার আসছে। বরাবরেই তুলনায় সেই খরিদ্দারের সংখ্যায় এবারে কম।
অন্যদিকে কলকাতা হাইকোর্ট বাজি বিক্রি ও পোড়ানো বন্ধের নির্দেশ দিতেই জেলা পুলিশও নড়েচড়ে বসেছে। বহরমপুর, নবগ্রাম, খড়গ্রাম, ইসলামপুর, জলঙ্গি-সহ জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে গত কয়েকদিন অনেক বাজি আটক করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে শুধু বহরমপুরে ৩০০কেজি বাজি উদ্ধার করা হয়েছে। দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘থানাগুলিকে বাজির বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক বাজি উদ্ধার করা হয়েছে।’’ মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক(সাধারণ) সিরাজ দানেশ্বর বলেন, ‘‘বাজি পোড়ানো ও বিক্রি বন্ধে এসডিও, বিডিওদের নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে তাঁরা যৌথ ভাবে কাজ করছেন।’’
বহরমপুরের ইন্দিরা সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী রতনকুমার ঘোষ বরাবরই কালীপুজোয় আলোর পাশাপাশি বাজির ব্যবসা করেন। এবারে কিছু বাজি তুলেছিলেন। কিন্তু কলকাতা হা্ইকোর্ট বাজি পোড়ানো ও বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দিতেই তা পাইকারদারকে ফেরত দিয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘এবারে সাধারণ মানুষও বাজির বিষয়ে সচেতন হয়েছেন। আদালতের নির্দেশ মেনে বাজি বিক্রি বন্ধ রেখেছি। লোকজনও বাজির খোঁজে আসছেন না।’’ সেখানকার অপর ব্যবসায়ী জগন্নাথ কুণ্ডু বলেন, ‘‘এবারে কালী পুজোয় বাহারি মোমবাতি ও রকমারি আলো বিক্রি করছি। তবে করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের জেরে সাধারণ মানুষের হাতে টাকা নেই। তাই আলোর বাজারও ভাল নয়।’’
বাজি পোড়ানো ও বিক্রি বন্ধের নির্দেশিকাকে স্বাগত জানিয়েছেন মুর্শিদাবাদের পুজো উদ্যোক্তারাও। বহরমপুরের ক্যান্টনমেন্ট রোডের মর্নিং গ্লোরিং ইউথ সোসাইটি (এমজিওয়াইএস)এর কালীপুজো ২৯বছরে পা দিল। পুজোর পরের দিন রাতে তাঁরা ব্যারাক স্কয়ারে বাজি পোড়ায়। তাঁদের দাবি, এবারে অনেক আগে থেকেই করোনার কারণে কালীপুজোয় বাজি ও সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।