West Bengal Budget 2024-25

বাজেটে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তাঁত মহলে

বাজেটে ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল আর্টিজেন ফিনান্সিয়াল বেনিফিট স্কিম ২০২৪’ নামে একটি নতুন প্রকল্পের প্রস্তাবে ঘোষণা করা হয়েছে।

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:২২
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

Advertisement

রাজ‍্য বাজেটে তাঁত, হ‍্যান্ডলুম এবং খাদির জন‍্যে একাধিক প্রকল্পের প্রস্তাবে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিলেন নবদ্বীপের গঙ্গার পূর্বপাড়ের স্বরূপগঞ্জ বা পশ্চিমপাড়ের নবদ্বীপ এবং সংলগ্ন বর্ধমানের তাঁত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা। পাওয়ার লুম, হস্তচালিত তাঁতশিল্পী থেকে খাদির কারিগর বা তাঁতি কারও কাছেই পরিষ্কার নয় বাজেটে ঘোষণায় তাঁরা কতটা উপকৃত হবেন। রাজ্যের অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার তাঁর বাজেট বক্তৃতায় ঘোষণা করেন, ১৮-৬০ বছর বয়সী কোনও নথিভুক্ত তাঁতির যদি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তা হলে সেই ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যেরা এককালীন দু’লক্ষ টাকা সরকারি সহায়তা পাবেন। তিনি এ দিন ‘আর্টিজেন অ্যান্ড উইভার বেনিফিট স্কিম’-এ ওই সহায়তা পাওয়া যাবে বলে জানান। এ জন্য বাজেটে ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল আর্টিজেন ফিনান্সিয়াল বেনিফিট স্কিম ২০২৪’ নামে একটি নতুন প্রকল্পের প্রস্তাবে ঘোষণা করা হয়েছে। যাঁরা প্রথাগত ভাবে কারিগর হিসাবে জীবিকা নির্বাহ করেন তাঁরা কাজের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, উপকরণ কেনার জন্য এককালীন ১৫ হাজার টাকা সাহায্য পাবেন এবং শিল্প সমবায় সমিতিগুলি যন্ত্রপাতি কেনা, শেড নির্মাণ, মেরামতি ইত্যাদির জন্য ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সরকারি সাহায্য পাবেন। এ জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। যাতে প্রথম বছরে দু’লক্ষ কারিগর বা শিল্পী উপকৃত হবেন বলে মন্ত্রীর দাবি।

যদিও বাজেটে খুশি নন পাওয়ার লুম ব্যবসায়ীরা। নবদ্বীপ চৈতন্য প্রোগ্রেসিভ পাওয়ার লুম অ্যাসোসিয়েশনর সম্পাদক নিশীথ ভৌমিক বলেন, “জানি না রাজ্য বা কেন্দ্র সরকার পাওয়ার লুমের বর্তমান দুরাবস্থা সম্পর্কে কতটা সচেতন। রাজ্যের হাতে বিদ্যুৎ আছে। আমরা আশা করেছিলাম বিপুল বিদ্যুৎ ব্যয়ে কিছুটা ছাড় মিলবে। কোনও কথাই বলা হয়নি।” তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রের বাজেটেও কিছু ভাবা হয়নি পাওয়ার লুম নিয়ে। তিনি বলেন, “কেন্দ্র সরকার সুতোর দাম নিয়ন্ত্রণ করে কিছুটা সুরাহা দেবে ভেবেছিলাম। এখনও রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষ এই শিল্পের ওপর নির্ভর করে আছেন। রাজ্যের বাজেটেও তাঁরা কিছুই পেলেন না।”

Advertisement

বাজেটে প্রস্তাবিত ‘ওয়েস্টবেঙ্গল হ্যান্ডলুম অ্যান্ড খাদি উইভার্স ফিনান্সিয়াল বেনিফিট স্কিম ২০২৪’ –এ বলা হয়েছে ৫০০টি প্রাইমারি উইভার্স কো-অপারেটিভ সোসাইটি এবং ২০০টি খাদি সোসাইটি এবং ব্যক্তিগত হ্যান্ডলুম তাঁতিদের তিনটি প্রধান সমস্যা সমাধান করবে রাজ্য সরকার। এক, সোসাইটির অনাদায়ী ঋণের এককালীন বন্দোবস্ত। দুই, কার্যকরী মূলধন সহায়তা। তিন, ভর্তুকি মূল্যে সুতো সরবরাহ করা। বাজেট ঘোষাণা প্রসঙ্গে নবদ্বীপের এক খাদি সোসাইটির সম্পাদক শুভাশিস চক্রবর্তী বলেন, “মূলধনের সহায়তার প্রস্তাব যদি কার্যকর হয়, তা হলে সত্যিই আমাদের মতো প্রতিষ্ঠান এবং তার সঙ্গে যুক্ত বহু পরিবার উপকৃত হবেন।” অন্য দিকে, বিভিন্ন খাদি প্রতিষ্ঠানের কারিগর, তাঁতিদের অভিযোগ, গত ২০১৭-২০১৮ আর্থিক বছর থেকে চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবর্ষ পর্যন্ত রাজ্য সরকারের কাছে তাঁদের প্রাপ্য ভাতা (মার্কেট ডেভলপমেন্ট অ্যালাউন্স) বকেয়া রেখেছে। রাজ্য সরকার আগে এই বকেয়া মেটানোর ব্যবস্থা করুক।

নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স ইন্ড্রাস্ট্রি অ্যান্ড ট্রেডের যুগ্ম সম্পাদক তথা রাজ্যের র‍্যাপিয়ার লুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি তারক দাস বলেন, “বাজেট একধাপ এগিয়ে দিল তাঁতশিল্পকে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement