পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ জাতীয় সড়কে। —নিজস্ব চিত্র।
পুলিশ এবং শ্রমিকদের খণ্ডযুদ্ধে উত্তপ্ত হল মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ এবং সাজুর মোড় এলাকা। বুধবার সকালে সুতি থানার সাজুর মোড় এবং শমসেরগঞ্জ থানার বাসুদেবপুরে ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন ওড়িশা থেকে ফিরতে বাধ্য হওয়া ওই শ্রমিকেরা। নিজের রাজ্যে কাজের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। সেই অবরোধ তুলতে গিয়ে সংঘর্ষে জড়াল পুলিশ। অভিযোগ, প্রথমে বচসা, তার পরে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু করেন কয়েক জন। ভাঙচুর করা হয় একাধিক গাড়ি। পাল্টা কাঁদানো গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। তাতে আরও উত্তেজনা ছড়ায়। পরে আরও পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ওড়িশায় কাজ করতে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকেরা দলে দলে ফিরে আসছেন রাজ্যে। ওই শ্রমিকদের অভিযোগ, ওড়িশায় দীর্ঘদিন ধরে থাকলেও ইদানীং তাঁরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছিলেন। তাই সে রাজ্যের পাট গুটিয়ে বাড়ি ফিরে আসছেন তাঁরা। মঙ্গলবার দুপুরেও জনশতাব্দী এক্সপ্রেসে চড়ে কয়েকশো পরিযায়ী শ্রমিক হাওড়া স্টেশনে এসে নামেন। প্ল্যাটফর্মে নামার পরেই তাঁরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের অভিযোগ, ওড়িশায় তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে মারধর করা হচ্ছে। খুনের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। সব থেকে বড় কথা, স্থানীয় পুলিশের কাছে গেলে তারা অভিযোগ পর্যন্ত নিচ্ছে না।
বুধবারের অশান্তি নিয়ে পুলিশ এবং স্থানীয় খবর, ওড়িশা থেকে মুর্শিদাবাদের ফিরে এসেছেন বেশ কয়েক জন পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁরা প্রত্যেকে কাজের দাবি করে অবরোধে শামিল হন বুধবার সকালে। সেই অবরোধ তুলতে গিয়েই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। অন্য দিকে, অবরোধকারীরা জানাচ্ছেন, বাড়ি এসে তাঁদের হাতে কাজ নেই। সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। তাই পথে নেমেছেন।
পুলিশ এবং শ্রমিকের সংঘর্ষে দুই পক্ষের বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। জখম হন মিরাজ শেখ নামে এক ট্র্যাফিক পুলিশ আধিকারিক। তাঁর হাতে চোট লাগে বলে জানা গিয়েছে। অবরোধ এবং অশান্তির জেরে দীর্ঘ ক্ষণ জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। রাস্তায় আটকে পড়ে একের পর এক গাড়ি এবং যাত্রিবাহী বাস। হয়রানির শিকার হন যাত্রীরা। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে জানিয়েছে পুলিশ।