ঢাক কাঁধে কুশল। নিজস্ব চিত্র
স্লেট-খড়িতে এখনও হাত পাকেনি। অথচ ঢাক বাজানোয় হাত পাকিয়ে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে পাঁচ বছরের কুশল। তার বাজানো ঢাকের তালে মুগ্ধ গ্রামের মানুষ। তেহট্টের খাসপুরের ছোট্ট শিশু ঢাকি কুশল দাসের বয়স মাত্র ৫ বছর ৭ মাস। এখনও সব কথা স্পষ্ট বলতে পারে না। কিন্তু নানা বোলের ঢাক বাজিয়ে সকলের মন জয় করে নিয়েছে।
খাসপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক গৌরচন্দ্র সাহা বলেন, ‘‘পাঁচ বছর বয়স পূর্ণ না হওয়ায় গতবার সে স্কুলে ভর্তি হতে পারেনি। তবে এখন নিয়মিত স্কুলে আসে। প্রতিদিন টিফিন পিরিয়ডে স্কুলে ঢাক বাজায়। তার ঢাকের মিষ্টি বোল শোনার নেশায় এখন স্কুলে ছাত্র ছাত্রীর হাজিরা বেড়ে গিয়েছে। ঢাকের বাজনদার হিসাবে স্কুলের শিক্ষকদের কাছেও সে প্রিয় পাত্র। এ বছর তাকে শিশু শ্রেণিতে ভর্তি করা হবে।’’
কুশলের মা তারামণি দাস জানান, দুই ছেলের মধ্যে কুশল ছোট। ছোটবেলা থেকেই কুশলের বাজনার দিকে খুব ঝোঁক রয়েছে। পাড়ার যে কোনও পুজোয় ঢাকের আওয়াজ শুনলেই ছুটে যেত। বাড়িতে থালা বাটি যা কিছু নিয়েই বাজাতে শুরু করত। দুই বছর বয়সে এক দিন গ্রামের মেলা থেকে কুশলকে একটি ছোট ঢাক কিনে দিয়েছিলেন। তখন সবে হাঁটতে শুরু করেছে। তার পর থেকে সেই ঢাকটিই সব সময়ের সঙ্গী ছিল।
তারামণির বাবার বাড়িতে ঢাক বাজানো সকলের পেশা। কুশলের দাদুর বাড়িতে ঢাক তৈরির ব্যবসা রয়েছে। কুশলের বাজনার কথা শুনে তিনি একটি ছোট ঢাক তৈরি করে দেন। যখন তখন বিভিন্ন তালে সে ঢাক বাজানো শুরু করে। তার ঢাকের বোল শুনে অনেকেই অবাক হয়েছেন।
গ্রামের লোকজন জানাচ্ছেন, এত অল্প বয়সে ঢাকের নানা রকমের বাজনা রপ্ত করা যথেষ্ট কঠিন কাজ। ইতিমধ্যেই সে প্রতিমা বিসর্জনের বাজনা, আরতির বাজনা-সহ অন্য বিভিন্ন রকমের বাজনা অনায়াসে বাজাতে পারে। তাঁদের আশা, নিয়মিত অভ্যাস করলে কুশল একদিন নামকরা ঢাক বাদক হবে।