তেহট্ট সমবায়ের ৭২ টি আসনের মধ্যে ৬৬-৬ ব্যবধানে বামেরা পরাজিত করল শাসক দল তৃণমূলকে। —প্রতীকী চিত্র।
তাহেরপুর পুরসভার উপনির্বাচন, পলাশীপাড়ার সমবায়ের পর তেহট্ট সমবায় নির্বাচনেও জয়ের হাসি বামেদের। বস্তুত, নিরঙ্কুশ জয় হল তাদের। তেহট্ট সমবায়ের ৭২ টি আসনের মধ্যে ৬৬-৬ ব্যবধানে তারা পরাজিত করল শাসকদল তৃণমূলকে। অন্য দিকে, এই নির্বাচনে খাতাই খুলতে পারেনি রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে একটি আসনও পায়নি বামেরা। বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোট মাত্র ১টি আসন পেয়েছিল। সেটিও আব্বাস সিদ্দিকির দলের। তবে পঞ্চায়েত ভোটের আগে সমবায়ের ফলাফলকে তাঁদের ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত বলে দাবি করতে শুরু করেছেন নদিয়ার বাম নেতৃত্ব।
রবিবার তেহট্ট বিধানসভা কেন্দ্রের তেহট্ট কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতির পরিচালন সমিতির নির্বাচন হয়। ওই সমবায়ে মোট আসন সংখ্যা ৭২টি। ভোটার সংখ্যা ১,৭৯৯। সবক’টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল এবং বামেরা। ওই অঞ্চলে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি যথেষ্ট শক্তিশালী হলেও অদ্ভুত ভাবে মাত্র ৩৪টি আসনের প্রার্থী দিয়েছিল তারা। সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয় ভোট গণনা। গণনার প্রতি রাউন্ডেই একের পর এক আসন বামেদের পক্ষে যেতে থাকে। খাতাই খুলতে পারেনি বিজেপি। খুব অল্প ব্যবধানে মাত্র ৬টি আসন নিয়ে সন্তুষ্ট হতে হয়েছে তৃণমূলকে। উল্লেখযোগ্য ভাবে তফসিলি সংরক্ষিত ১০টি আসনের ১০টিতেই বিরাট ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন বাম প্রার্থীরা। সিপিএম নেতাদের দাবি, ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই ফল বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে তাঁদের। যদিও এই ভোটকে আমল দিতেই নারাজ তৃণমূল এবং বিজেপি। তাঁদের সাফ দাবি, সমবায় ভোটের সঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের কোনও সংযোগ নেই। সম্পর্কও নেই।
যদিও সমবায় ভোটে জয়ের পর সন্ধ্যা থেকে উৎসবে মাতেন বাম কর্মী এবং সমর্থকেরা। লাল পতাকা উড়িয়ে, আবির মেখে বিজয় মিছিল করেন তাঁরা। সিপিএমের দক্ষিণ অঞ্চল কমিটির সম্পাদক সুবোধ বিশ্বাস বলেন, ‘‘অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ ভোট হলে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা তেহট্টের ভোটাররা দেখিয়ে দিলেন।’’ তৃণমূল ব্লক সভাপতি বিশ্বরূপ রায়ের কটাক্ষ, ‘‘এই ফলাফল প্রত্যাশিত। নিজেদের পরিবারের সদস্যদের ভোটার করে সমিতি দখলের ব্লু-প্রিন্ট আগেই করে রেখেছিল বামেরা।’’ আর বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য সৌমেন সরকারের মন্তব্য, ‘‘আমরা প্রথম বার এই সমবায় নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছি। এটাই আমাদের কাছে বড় জয়।’’