সকাল থেকেই দফায়-দফায় চলল বৃষ্টি। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার। কখনও ছিটেফোঁটা কখনও আবার অঝোরে বৃষ্টি লেগেই আছে। আর বাস-ট্রেন বন্ধ থাকায় জামাইদের সে ভাবে আনাগোনা নেই। সব মিলিয়ে প্রত্যাশা মতো জমল না বুধবারের ষষ্ঠীর বাজার।
ব্যবসায়ীদের কথায়, অন্য বছর ষষ্ঠীর দিন সকালে বাজারগুলিতে তিল ধারণের ঠাঁই থাকত না। সকাল থেকেই লোকজন বাজারে চলে আসতেন মাছ, মাংস, ফল-সহ অন্যান্য জিনিস কিনতে। ব্যবসায়ীরাও একটু বেশি লাভের আশায় অন্য দিনের তুলনায় এ দিন মাছ, মাংস, ফল বেশি করে তুলতেন। কিন্তু এ বারের বাজারের হাল দেখে আকাশের মতো মুখ ভার ব্যবসায়ীদেরও।
কল্যাণী দু’নম্বর মার্কেটে ফলের ব্যবসায়ী গৌর সরকারের কথায়, ‘‘জিরাটের হিমসাগর আম ৩৮ টাকা কিলোগ্রাম কিনে আজ ৩৬ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। বাজারে লোকজন নেই। বিক্রিও হচ্ছে না। শান্তিপুরী হিমসাগর আমের দাম বেশি থাকায় বিক্রি না-হওয়ায় ভয়ে তুলিনি।’’ ওই বাজারেই আর এক ফলের ব্যবসায়ী সুজিত মণ্ডলের কথায়, ‘‘গাড়ি ভাড়া দিয়ে প্রতি কেজি পেঁপেতে ৫০টাকা করে খরচ পড়েছে। লাভ তো দূরের কথা বিক্রিই হচ্ছে না।’’ শুধু ফলের বাজার নয় একই অবস্থা মাছ-মাংস, মাছের বাজারে। কল্যাণীর কাঁঠালতলা বাজারের ব্যবসায়ী জগদীশ সরকার বলছেন, “বুধবারের বাজার এত খারাপ হবে ভাবিনি। তাঁর আশা, বৃষ্টি না-হলে বাজার জমত।’’
বেথুয়াডহরি এক মাছ ব্যবসায়ী সঞ্জু সাহার কথায়, ‘‘অন্য বছরের তুলনায় বাজার খারাপ হলেও আর পাঁচটা দিনের তুলনায় একটু ভাল হয়েছে বাজার।’’ বাজারে বিক্রি কম হলেও বাজার ছিল চড়া। এ দিন বেথুয়াডহরিতে ৩০০-৪০০ গ্রাম ইলিশ ৫০০ টাকা কেজি, ৫০০-৭০০ গ্রামের মাছ ৮০০ টাকা কেজি ও এক কেজি ওজনের মাছ প্রায় ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়াও পাবদা ৬০০ টাকা চিংড়ির দাম ছিল ৬০০ টাকা প্রতি কেজি।
বাজার খারাপের কথা শোনালেন শহিদ পল্লির মাছ ব্যবসায়ী রমেশ বিশ্বাস। তিনি বলছেন, “যা আশা করেছিলাম সেটা হল না। বেশি দাম দিয়ে মাছ কিনেছিলাম। এখন কম দামে বিক্রি করলে অনেক টাকাই ক্ষতি হয়ে যাবে। দেখি কালকের বাজারে বিক্রি করতে পারি কি না।”
মাছের বাজারের পাশাপাশি মাংসের বাজারের অবস্থাও একই। গয়েশপুরের চেকপোস্টের কাছে মুরগি মাংসের ব্যবসায়ী সৌমিত্র ঘোষ বলছেন, “আজকের জন্য বেশি করে পোলট্রি মুরগি তুলে রেখেছিলাম। বিক্রি হল না। বাজারটা আজ ঠিক করে জমল না।” জেএনএম হাসপাতালের সামনে ছাগলের মাংসের ব্যবসায়ী বাবলু কুরেশি একই কথা বলছেন।
অন্য দিকে, ট্রেন বন্ধ থাকায় ভুগতে হয়েছে জামাইদের। চাকদহের পাপন দে, সুধীন হালদারেরা ট্রেন থাকায় , মোটরাবাইকে, টোটোয় শ্বশুরবাড়ি যান।