মঙ্গলবার সকালে তিব্বতে ভূমিকম্পের পরের পরিস্থিতি। ছবি: সংগৃহীত।
সাতসকালে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল নেপাল। কম্পন অনুভূত হয়েছে উত্তরবঙ্গ, বিহারের উত্তরাংশ-সহ দেশের বিভিন্ন অংশে। জানা গিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎসস্থল তিব্বত। ভূমিকম্পের জেরে এখনও পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
প্রথম কম্পনটি হয় সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে। রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৭.১। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই ফের কেঁপে ওঠে শিজ়াং। পর পর কম্পন অনুভূত হয়েছে একই অঞ্চলে। দ্বিতীয় কম্পনটি হয় সকাল ৭টা ২মিনিটে। তীব্রতা ছিল ৪.৭। এর পাঁচ মিনিট পরে আবার তৃতীয় কম্পন, সকাল ৭টা ৭মিনিটে। তৃতীয় কম্পনের তীব্রতা ছিল ৪.৯। প্রথম দু’টি ভূমিকম্প হয়েছে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। তৃতীয়টি ৩০ কিলোমিটার গভীরে। ছ’মিনিট পরে আরও একটি কম্পন অনুভূত হয়, যার তীব্রতা ছিল ৫।
সাধারণত কোথাও ভূমিকম্প হলে, তার পরের কিছু ক্ষণ ধরে এই ধরনের কম্পন (আফটারশক) দেখা যায়। মঙ্গলবার সকালে নেপাল-তিব্বত সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এই ভূমিকম্পের জেরে রাজধানী দিল্লি থেকে শুরু করে বিহার এবং ভারত-নেপাল সীমান্তবর্তী অঞ্চলে টের পাওয়া গিয়েছে কম্পন। উত্তরবঙ্গের কিছু অঞ্চলেও মৃদু কম্পন অনুভূত হয়েছে। পাশাপাশি ভুটান এবং চিনের কিছু অঞ্চলেও কম্পন টের পাওয়া গিয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে।
ভূমিকম্পের যে তীব্রতা ছিল, তাতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও রয়ে গিয়েছে। বিহারের পটনা-সহ বেশ কিছু অঞ্চলে কম্পন টের পাওয়া গিয়েছে। বিশেষ করে বিহারের উত্তর দিকে নেপাল সীমান্তবর্তী অঞ্চলে কম্পন বেশি মাত্রায় অনুভূত হয়েছে। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ, সিকিম, অসমের কিছু অঞ্চলেও ভূমিকম্প টের পাওয়া গিয়েছে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তিব্বতের অপর একটি শহর শিগাতসে শহরে ৬.৮ তীব্রতার ভূমিকম্প হয়েছে বলে দাবি করেছে চিন। শিগাতসে হল তিব্বতের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। চিনা সংবাদমাধ্যমগুলিতে দাবি করা হচ্ছে, শিগাতসের ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে গত পাঁচ বছরে তিন বা তার বেশি মাত্রার ২৯টি ভূমিকম্প হয়েছে। তবে মঙ্গলবার সকালের মতো তীব্রতা কোনওটিরই ছিল না।
মঙ্গলবার সকালের এই ভূমিকম্পের জেরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ মানুষের মনে। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে কম্পনের পর আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন অনেকে।
এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বরেও ৬.৪ মাত্রার জোরালো ভূমিকম্প হয়েছে নেপালে। সেই বারের ভূমিকম্পে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয় হিমালয়ের কোলে থাকা এই পাহাড়ি দেশে। বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, এই অঞ্চলে ভারতীয় পাতের সঙ্গে ইউরেশীয় পাতের সংঘর্ষের প্রবণতার কারণে এই অঞ্চলে ভূমিকম্পের আশঙ্কা বেশি থাকে।