Samserganj

ভাঙনে নদীর গর্ভে জমি, ফের আতঙ্ক

গত দু’দিন ধরে শমসেরগঞ্জের উত্তর চাচণ্ডে ভাঙনে একের পর এক জমি, ২২টি বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছিল। শনিবার ওই এলাকায় ভাঙনের দাপট কিছুটা থামে।

Advertisement

বিমান হাজরা , জীবন সরকার 

শমসেরগঞ্জ শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৪৪
Share:

নতুন করে ভাঙন শুরু শিকদারপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

গত বছরেও বর্ষার বিদায়ের পরেই ভাঙনের কবলে পড়েছিল শমসেরগঞ্জের ধানঘড়া, ধুসুরিপাড়া-সহ কয়েকটি এলাকা। একের পর এক বাড়ি, কৃষিজমি গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে গিয়েছিল। এ বারও সেই একই বিপদের সম্মুখীন ওই এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement

গত দু’দিন ধরে শমসেরগঞ্জের উত্তর চাচণ্ডে ভাঙনে একের পর এক জমি, ২২টি বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছিল। শনিবার ওই এলাকায় ভাঙনের দাপট কিছুটা থামে। তবে ওইদিন রাত থেকে ফের ভাঙনের কবলে শিকদারপুর। সেখানকার প্রায় ৫০ মিটার এলাকা জুড়ে শনিবার রাত ৮টা থেকে শুরু হয় ভাঙন। তবে এই এলাকায় বসতি নেই। বিঘা দেড়েক ফাঁকা জমি ও গাছপালা ধসে পড়ে নদীতে। চাচণ্ড এবং শিকদারপুর গ্রামের মধ্যে দূরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার। শুক্রবার প্রবল ভাঙনের মুখে পড়েছিল চাচণ্ড। শনিবার রাতে গঙ্গার ধারে ফাটল দেখা যায় বেশ কিছু এলাকায়। বিষয়টি জানাজানি হতেই নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ভাঙন কবলিত এলাকায়। এ দিন ওই এলাকায় গঙ্গার জলস্তর ৬ সেন্টিমিটার বেড়ে ১৬.২৬ মিটার দাঁড়িয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে গঙ্গাতীরবর্তী এলাকার প্রায় ৩০টি পরিবার বাড়ি থেকে যাবতীয় আসবাবপত্র নিয়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়া শুরু করেছে। রবিবার সকালেও তাঁদের অনেককে আসবাবপত্র নিয়ে চলে যেতে দেখা গিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘দু’দিন আগে হঠাৎ ভোরবেলা ভাঙন শুরু হয় চাচণ্ডে। বাড়ির কোনও জিনিসপত্র বের করতে পারেনি বাসিন্দারা। আমরা আগাম জিনিসপত্র আত্মীয়-জনদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছি। বিকল্প মাথা গোঁজার জায়গা নেই। তাই অন্যত্র যেতে পারছি না।’’ প্রতাপগঞ্জের প্রধান আইসা বিবি জানান, নতুন করে চাচণ্ডে ভাঙন শুরু হয়েছে। বিষয়টি তিনি প্রশাসনকে জানিয়েছেন। এই আবহে এ দিন দুপুরে শমসেরগঞ্জের ভাঙন দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে যান একটি মানবাধিকার সংগঠনের জনা কুড়ি সদস্য। ভাঙন রুখতে পাথরের বাঁধ দিয়ে স্পার বাঁধানোর দাবি তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের আশঙ্কা, যে ভাবে শমসেরগঞ্জে ভাঙন চলছে তাতে মাস ছয়েক বা এক বছরের মধ্যে এক কিলোমিটার জুড়ে বসতি ধ্বংস হয়ে যাবে। তাঁরা চাচণ্ড থেকে মহেশটোলা পর্যন্ত একাধিক গ্রাম ঘুরে দেখেন। ওই সংগঠনের মুর্শিদাবাদ জেলার সম্পাদক গোলাম মহম্মদ আজাদ বলেন, “ভাঙন ঠেকাতে সরকারের কাছে দাবি তুলে ধরতে হবে ক্ষতিগ্রস্তদেরই। আমরা সবরকম ভাবে তাঁদের সাহায্য করব।’’ প্রতিনিধি দলের আরেক সদস্য আলতাব আমেদ বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে শমসেরগঞ্জে ভাঙনের কথা শুনছি। কিন্তু এখানে এসে দেখলাম ভাঙন ঠেকাতে তেমন কোনো কাজই করা হয়নি।’’ সেচ দফতরের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘‘ভাঙন রোধে সরকারি নিয়ম মেনে কাজ চলছে। পাথর দিয়ে স্পার বাঁধানোর নিয়ম আর নেই। বালির বস্তা দিয়ে পাড় বাঁধিয়ে তার উপর জিও সিট পাতা হবে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement