Umarpur

কারখানার ম্যানেজারকে গুলি করে খুন

পুলিশের অনুমান, টাকা লুঠ করতেই পাঁচিল ডিঙিয়ে কারখানায় ঢুকে দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উমরপুর শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২০ ০৪:৩৪
Share:

ম্যানেজারের ঘরে তদন্ত (বাঁ দিকে)। তোলা হচ্ছে দেহ। নিজস্ব চিত্র

প্লাস্টিক কারখানার মধ্যেই রাতে ঘরে ঢুকে গুলি করে খুন করা হল কারখানার ম্যানেজার েকতন বাদিয়ানিকে (৫১)। হাওড়ার সালকিয়ার বাসিন্দা কেতন ১৪ বছর ধরে রঘুনাগঞ্জের উমরপুরে ওই কারখানায় রয়েছেন। প্রায় ২৫ বছরের প্লাস্টিক শিল্প তালুক অতীতে এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি। কেতনের ঘরের লকারটি ভাঙা ছিল। ওই লকারেই থাকত কারখানার লেনদেনের টাকা। পুলিশের অনুমান, টাকা লুঠ করতেই পাঁচিল ডিঙিয়ে কারখানায় ঢুকে দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করেছে। কেতনের পরিচিত সকলেরই বক্তব্য, তাঁর কোনও শত্রু ছিল না।

Advertisement

প্লাস্টিক কারখানার ভিতরেই দোতলার একটি ছোট ঘরে থাকতেন কেতন। সেই ঘরের মধ্যে কপালের ডান পাশে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁর দেহ মিলেছে বৃহস্পতিবার সকালে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্দীপ কাররা বলেন, “গুলি করে খুন করা হয়েছে কারখানার ম্যানেজারকে। পিস্তল থেকে গুলি করা হয়েছে তাঁর ডান কপালে। একটি গুলি মেঝে থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।’’ তিনি বলেন, ‘‘খুনের মোটিভ দু’টি হতে পারে। কোনও রেষারেষির বদলা নিতে এই খুন, অথবা তাঁর ঘরে থাকা কারখানার মোটা অঙ্কের টাকা লুঠ করতেই তাঁকে মারা হয়েছে। আলমারির লকার ভাঙা ছিল। তাতে কোনও টাকা মেলেনি। তদন্ত চলছে। সমস্ত কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।”

Advertisement

বুধবার লকডাউনেও কারখানায় উৎপাদন চালু ছিল। রাতের শিফটেও কারখানা চত্বরের মধ্যেই ৫০ ফুট দূরে আর একটি ভবনে ৭ জন কর্মী গোটা রাত ধরে মেশিন চালিয়ে কাজ করেছেন। এমনকি যে দোতলা ভবনের ঘরে ওই ম্যানেজারকে গুলি করে খুন করা হয়েছে সেখানে ওঠার সিঁড়ির পাশেই নীচে একটি ঘরে দুজন কর্মী ঘুমিয়ে ছিলেন। কার্তিক জানা এবং লিট্টু রাউথ নামে সেই দু’জনও রাতে গুলি চালিয়ে লুঠপাটের ঘটনার কথা জানতেই পারলেন না, পুলিশের কাছে এটাই আশ্চর্যের ঠেকছে। কেতনের ঘরের দরজাও ভাঙা হয়নি। কিন্তু তিনি দরজা দিয়েই রাতে শুতেন বলে জানা গিয়েছে। তাই পরিচিত কারও এই খুনের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান।

উমরপুরে প্লাস্টিক শিল্পাঞ্চলে প্রায় ৬০টি কারখানা রয়েছে। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে ১০০ মিটার দূরে প্রায় এক বিঘে জমিতে এই প্লাস্টিক কারখানাটি গড়ে ওঠে ২০০৭ সালে। মালিক কলকাতার বাসিন্দা সঞ্জয় নাহাটা। মাঝে মধ্যে তিনি আসতেন কারখানার হিসেব নিকেশ বুঝে নিতে। পুরো কারখানাটাই চালাতেন মূলত ম্যানেজার কেতন বাদিয়ানিই। কারখানায় প্রায় ৩০ জন কর্মী কাজ করেন। ৮টা থেকে ৮টা পর্যন্ত দিনে ও রাতে দু’টি শিফট চালু রয়েছে কারখানায়। দু’জন ছাড়া সমস্ত কর্মীই স্থানীয় আশপাশের গ্রামের। বুধবার রাতে যাঁরা কারখানায় কাজ করছিলেন, তাঁদের কয়েকজন সিরাজ শেখ, হারাধন হালদার জানিয়েছেন, মেসিনের শব্দে তাঁরা কিছুই কোনও চিৎকার বা শব্দ শুনতে পাননি।

প্রতিবেশী এক প্লাস্টিক কারখানার মালিক নবাব শেখ বলছেন, “এতদিন আছেন উমরপুরে। কারও সঙ্গে কোনও শত্রুতা ছিল না তাঁর।”

খুন হওয়ার আগে ম্যানেজারের সঙ্গে শেষ দেখা হয় কর্মী লিট্টুর। লিট্টু বলেন, “রাত ১০টা নাগাদ খাবার দিয়ে আসি আমি। সকালে উঠে চা দিতে গিয়ে দেখি দরজা খোলা। বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ম্যানেজার।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement