—প্রতীকী চিত্র।
দাদাকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘ দিনের বিবাদের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড বলে মনে করা হচ্ছে। রবিবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় মুর্শিদাবাদের লালগোলা থানা এলাকায়। নিহত যুবক এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত ছিলেন। তবে খুনের নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে রবিবার রাতে থানা ঘেরাও করেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা।
লালগোলা থানার শীতেশনগর গ্রামের বাসিন্দা হাজিকুল ইসলাম (৩৫)। রবিবার সন্ধ্যায় তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাজিকুলের সঙ্গে তাঁর ভাইদের দীর্ঘ দিন ধরে পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ ছিল। ব্যক্তিগত কারণে সম্পত্তি ভাইকে না দিয়ে অন্যত্র বিক্রি করেছিলেন হাজিকুল। তার পর বিবাদ চরমে পৌঁছেছিল। তার জেরেই রবিবার সন্ধ্যায় ধারালো হাঁসুয়া নিয়ে হাজিকুলের উপর তাঁর ভাইরা চড়াও হন বলে অভিযোগ। দুই ভাই খয়ের শেখ এবং সাবিরুল শেখকে খুঁজছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগেও পরিবারের সদস্যদের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন হাজিকুল। হাসপাতালে দীর্ঘ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। সম্প্রতি ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। তার পরেই আবার হামলা। রবিবার সন্ধ্যায় হাজিকুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপানো হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর পরেই স্থানীয় বাসিন্দা এবং স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। লালগোলা থানা অবরোধ করেন তাঁরা। অভিযোগ, পুলিশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেনি। দ্রুত পদক্ষেপ করে দোষীদের গ্রেফতারির দাবি তোলা হয়েছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত অভিযুক্তেরা অধরা। থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
লালগোলার তৃণমূল বিধায়ক মহম্মদ আলি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘হাজিকুলের উপর আগের হামলার ঘটনা নিয়ে অভিযোগ করার পরও লালগোলা থানার ওসি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি। উল্টে দলের কর্মীদের হেনস্থা করেছিলেন। থানার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক এখানে কাউকে তৃণমূল কংগ্রেস করতে দিতেই রাজি নন।’’
মৃতের স্ত্রী মাহবুবা বিবি বলেন, ‘‘পারিবারিক বিবাদের জেরে আমার দেওর খায়ের শেখ, সাবিরুল শেখ এবং তাঁদের ছেলেরা আমার স্বামীকে খুন করেছেন। আমি সকলের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’
লালগোলা থানার সামনে দীর্ঘ ক্ষণ বিক্ষোভের পর বিশাল পুলিশবাহিনী পৌঁছয়। তারা বিক্ষোভ তুলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। ভগবানগোলা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক উত্তম গড়াই বলেন, ‘‘এক ভাইয়ের জমি পরিবারের বাইরে বিক্রি করা নিয়ে বিবাদ, যার জেরে এই খুন। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ এখনও পাওয়া যায়নি। তদন্ত চলছে।’’