স্রেফ সন্দেহের বশে স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করল এক ব্যক্তি। রবিবার রাতে মুরুটিয়ার পাকশি বিলপাড়ার ঘটনা। মৃতের নাম জরিনা বিবি (৩৫)। স্ত্রীকে খুন করার পরেই থানায় হাজির হয় স্বামী হাফেজ মোল্লা। পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে। উদ্ধার করা হয় খুনে ব্যবহৃত ছুরিটিও। পুলিশ ওই রাতেই হাফেজকে গ্রেফতার করে। সোমবার দেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়।
তেহট্টের এসডিপিও কার্তিক মণ্ডল জানান, স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে রবিবার রাতে হাফেজ গ্রেফতার করা হয়েছে। খুনের কথাও সে স্বীকার করেছে। সোমবার তাকে তেহট্ট আদালতে তোলা হয়।
বছর চল্লিশের হাফেজ কেরালায় দিনমজুরের কাজ করে। তার ছেলেও কেরালায় কাজ করে। মাস তিনেক আগে মেয়ে মেরিনার বিয়ে হয়ে যায়। তারপর থেকে বাড়িতে জরিনা একাই থাকতেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, দিন পনেরো আগে সে বাড়ি ফেরে। জরিনাকে সন্দেহ করত হাফেজ। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝামেলা বাধত। রবিবার দিনমজুরের কাজে গিয়েছিল হাফেজ। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরলে দু’জনের মধ্যে ফের ঝামেলা বাধে। অভিযোগ, তারপর ধারাল ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে গলায় একের পর এক কোপ মারে হাফেজ। ঘটনাস্থলেই মারা যান জরিনা। এ দিকে, চিৎকার চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে যান। দেখা যায়, মেঝেতে জরিনা পড়ে রয়েছে। সারা দেহ রক্তে মাখামাখি। তারাই পুলিশকে খবর দেন।
মৃতার আত্মীয় সাইফুল মণ্ডল ও নজরুল হালসানার জানান, খুনের পিছনে একা হাফেজ নয়, হাফেজের বোন খদেসা বিবি ও ভগ্নীপতি আসমত মণ্ডলেরও হাত রয়েছে। দিন কয়েক আগে আসমতের মেয়ে একটি ছেলের সঙ্গে পালায়। সব দোষ গিয়ে পড়ে জরিনার উপর। শনিবার খদেসা ও আসমত জরিনাকে মারধর করে বলেও অভিযোগ।
স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন হওয়ার ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। গত বছর ২৪ জানুয়ারি করিমপুরে অভয়পুরে স্ত্রী রুমিয়া বিবি ও দেড় বছরের ছেলেকে খুন করেছিল স্বামী আনোয়ার গাজি। তার পাঁচ দিন পরে হোগলবেড়িয়ায় গর্ভবতী স্ত্রী শর্মিলা মালিথাকে খুন করে স্বামী হোসেন মণ্ডল। একই বছরে ২৫ এপ্রিল করিমপুরের নাটনা গ্রামে স্বামী দীনেশ স্বর্ণকারের হাতে খুন হয়েছিল স্ত্রী বীথিকা ও মেয়ে দীপিকা। আদালতে সকলেরই বিচার চলছে। সকলেই জেল হেফাজতে রয়েছে।