এক তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ থানায় জমা পড়তে গ্রেফতার হয়েছে অভিযুক্ত। কিন্তু সেই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নির্যাতিতার পরিবারের উপরে চাপ দিচ্ছে অভিযুক্তের দুই সহকর্মী। শুধু তাই নয়, মারধরও করা হয় নির্যাতিতার স্বামীকে। এমনই অভিযোগ আনলেন নির্যাতিতার স্বামী। শনিবার তিনি বেলডাঙা থানায় লিখিত ভাবে তা জানিয়েছেন।
পাল্টা অভিযোগ উঠছে, অভিযুক্ত গত ৫ মার্চ গ্রেফতার হলেও নির্যাতিতার স্বামী ও তাঁর কয়েক জন সঙ্গী অভিযুক্ত যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন শনিবার রাতে সেখানে ভাঙচুরের চেষ্টা চালান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলির খামারগাছির বাসিন্দা দীপঙ্কর মাহান্ত ছাপাখানা মোড়ের একটি ভবনে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘স্কিল ডেভলপমেন্ট’ কেন্দ্র চালান। ওই স্কিল ডেভলপমেন্ট কেন্দ্রে চাকরি করেন ওই তরুণী। গত ৫ মার্চ রাতে তাঁর স্বামী রাকেশ মণ্ডল স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা-সহ নানা অভিযোগ আনেন দীপঙ্করের বিরুদ্ধে। বেলডাঙা থানায় লিখিত অভিযোগও
দায়ের করেন। অভিযোগ, পেয়ে বেলডাঙা থানার পুলিশ অভিযুক্ত দীপঙ্কর মহান্তকে গ্রেফতার করে। তাঁকে বহরমপুর সিজেএম আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নিদের্শ দেয় আদালত। দীপঙ্করকে ৫ মার্চ গ্রেফতার করা হয়েছিল। ৬ মার্চ তাঁকে আদালতে তোলা হয়। কিন্তু শনিবার রাতে হঠাৎ নির্যাতিতার স্বামী ও তাঁর কয়েক জন সঙ্গী ওই ‘স্কিল ডেভলপমেন্ট’ কেন্দ্রে ভাঙচুরের চেষ্টা চালান বলে অভিযোগ। রাস্তার ধারে থাকা কেন্দ্রের দু’টো বোর্ড ও সেন্টারের সামনের বোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়। পরে তাঁরা তিন তলা ভবনে উঠে ভাঙচুরের চেষ্টা চালান। তাঁর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, এরপরে রাকেশের নেতৃত্বে বেলডাঙা কলেজ মাঠে দীপঙ্কেরর সহযোগী রাজীব নাথের বাড়িতে ভাঙচুর ও তাঁকে মারার চেষ্টা করা হয়।
যদিও তা অস্বীকার করেছেন নির্যাতিতার স্বামী রাকেশ। তাঁর দাবি, ‘‘কারা ভাঙচুর চালিয়েছেন আমি জানি না।’’ উল্টে তিনি দাবি করেন, মামলা তুলে নেওয়ার জন্য দীপঙ্কের সহকর্মী রাজীব নাথ ও শুভেন্দু ঘোষ নামে দুই ব্যক্তি চাপ দিচ্ছিলেন। তাঁকে মারধরও করা হয়। সে কথা শনিবার রাতে বেলডাঙা থানায় লিখিত ভাবে রাকেশ জানিয়েছেন।
অন্য দিকে, রাজীব নাথও থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযোগ, তাঁর বাড়িতে রাকেশের লোকজন চড়াও হয়। তাঁকে মারধরের চেষ্টা হয়। মারধরের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি রাজীবের। তিনি বলেন, ‘‘শনিবার রাতে জনা কয়েক যুবক মোটরবাইকে চেপে বাড়িতে আসে। গেটে ধাক্কা মারতে থাকে। তারা পাঁচিল টপকে ঢোকার চেষ্টাও করে। কিন্তু তা করতে পারেনি। তাই আমি প্রাণে বেঁচে যাই।’’
তাঁর দাবি, রাকেশের নেতৃত্বে তাঁর বাড়িতে ওই ‘হামলা’ হয়।
ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বেলডাঙা থানার ওসি সমিত তালুকদার বলেন, ‘‘ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। ভাঙচুরের অভিযোগ পেয়েছি। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’