আবার বন্ধুর হাতে খুনের ঘটনা! প্রতীকী চিত্র।
বোলপুর-কাণ্ডের ছায়া এ বার চাপড়ায়। যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল বন্ধুর বিরুদ্ধে। রবিবার ভোরে পলাশীপাড়া থানার বড় নলদহ কলোনির মাঠ থেকে একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ৩৪ বছর বয়সি ইনতাজুল শেখের দেহ। তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদের রেজিনগর থানার আন্দুলবেড়িয়া গ্রামের ধোনচিপাড়ায়। ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ এবং পরিবার সূত্রে খবর, ভিন্রাজ্যে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন ইনতাজুল। দিন তিনেক আগে তিনি বাড়ি ফেরেন। বাড়িতে স্ত্রী এবং তিন সন্তান রয়েছে তাঁর। শনিবার ইনতাজুলের বন্ধু কাজল শেখ তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হলেও ইনতাজুল আর ঘরে ফেরেননি। শেষে পরিবারের লোকজন কাজলের বাড়িতে তাঁকে খুঁজতে যান। কিন্তু পাননি। রবিবার ভোরে আবার কাজলের বাড়িতে গেলে তাঁকে দেখতে পান ইনতাজুলের আত্মীয়রা। কিন্তু বন্ধুর খোঁজ জানতে চাইলে তিনি কিছুই জানেন না বলে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান।
তার পরই বড় নলদহ কলোনি মাঠের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে ওই যুবকের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পলাশীপাড়া থানার পুলিশ। মৃতের দাদা আতাবুর রহমান জানান, তাঁর ভাই বেশ কিছু দিন ধরে মাদকাসক্ত ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘শনিবার দুপুরে ওর বন্ধু কাজল বাড়িতে ডাকতে আসে। কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় আমরা খোঁজাখুঁজি শুরু করি। কাজলের বাড়িতে গেলেও তাদের খোঁজ মেলেনি। রবিবার সকালে কাজলের বাড়িতে গিয়ে কাজলের সঙ্গে দেখা হলে ও বলে ভাইয়ের সম্পর্কে কিছু জানে না। এর পরই ও বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এর কিছু ক্ষণ পর ভাইয়ের মৃতদেহ উদ্ধারের খবর আসে। আমাদের অনুমান, কাজলই আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে। আমরা ওর শাস্তি চাই।’’
স্থানীয়দের অভিযোগ, বেশ কিছু দিন ধরে পলাশিপাড়া থানার বেশ কয়েকটি এলাকা মাদক কারবারি ও মাদকাসক্তদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। যেখান থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেই পরিত্যক্ত বাড়িতেও দীর্ঘদিন ধরে মাদকের ঠেক চলত বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতদেহের পাশ থেকে মদের বোতলও উদ্ধার হয়েছে। এর আগেও একাধিক বার ওই এলাকায় খুনের ঘটনা ঘটেছে। তাদের অভিযোগ, পুলিশ প্রশাসনের তরফ কখনও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অন্য দিকে, ওই দেহ উদ্ধার প্রসঙ্গে পুলিশ জানায়, প্রাথমিক ভাবে তাদের মনে হয়েছে, পরিকল্পনা করে খুন হয়নি। মদের আসরে বচসা চলাকালীন মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করার ফলে ওই যুবকের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। রবিবার সকালে বীরভূমের ইলামবাজার থানার চৌপাহাড়ি জঙ্গল থেকে এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর গলার নলি কাটা ছিল। পরে জানা যায়, টাকার জন্য বন্ধুর হাতেই খুন হন তিনি।