—প্রতীকী চিত্র।
ইটের গাঁথনি প্লাস্টার করার প্রয়োজন ছিল। তার জন্য প্রয়োজন টাকারও। পেশায় রঙের মিস্ত্রি প্রবীর হাজরা তাই বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা শোধ করতে না পারায় আত্মঘাতী হলেন মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার ওই যুবক। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পরিবার সূত্রে খবর, বাড়ি সারানোর জন্য ২ বছরে শোধ করার শর্তে এক লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন প্রবীর। ১৩ মাস ধরে সেই ঋণ শোধ করছিলেন। কিন্তু পুজোর পর থেকে প্রবীরের রোজগার বলতে আর কিছুই ছিল না। মৃতের স্ত্রী পম্পা হাজরা বলেন, ‘‘২ হাজার টাকা করে ঋণ শোধ করতে গিয়ে কানের দুল বন্ধক রাখতে হয়েছে। মাসিক কিস্তিতে কেনা হয়েছিল মোটর বাইক। কী ভাবে বাকি টাকা শোধ করা যায় তা নিয়ে রবিবার আমার সঙ্গে আলোচনাও করে। তখন বন্ধক রাখা দুল দু’টি বিক্রি করার পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু তার পর ও কী করল...।’’ বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি।
পরিবারের লোকজন জানাচ্ছেন, সোমবার নিজের ঘরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন প্রবীর। স্ত্রী, বাবা-মা ছাড়াও বছর তিনেকের একটি ছেলে রয়েছে প্রবীরের। তাঁর বাবা রবি হাজরা বলেন, ‘‘এক সঙ্গে দুটো ঋণ টানতে পারছিল না। আমার কাছে হয়ত লজ্জায় টাকা চাইতে পারছিল না। শেষে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করল ছেলে।’’ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বৃদ্ধ বলেন, ‘‘গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঘরের ভেতর থেকে ওকে উদ্ধার করে হরিহরপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা ওকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।’’
প্রবীরের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের আবহ গ্রামে। হরিহরপাড়া থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।