জমে উঠেছে চৈত্র সেল। রানাঘাটে। নিজস্ব চিত্র
মোদী এসেছেন ব্রিগেডে। তাই চড়া ভোটের বাজারেও জেলা থেকে যেন উধাও বিজেপি। আর সেই ফাঁকা মাঠে দিনভর ছুটে বেড়াল তৃণমূল।
বুধবার বিজেপি নেতা-কর্মীরা যখন দলে-দলে কলকাতামুখো, তৃণমূলের লোকজন দাপিয়ে বেড়াল জেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত। প্রচারে খামতি দিল না সিপিএমও। যদিও তাতে তাঁরা এক ইঞ্চি পিছিয়ে পড়েছেন বলে মনে করছেন না বিজেপির নেতারা। বরং ছাপ্পান্ন ইঞ্চি চৌকিদারের হুঙ্কার শুনে তাঁরা বেশি উজ্জীবিত। তাঁদের দাবি, অনেক বেশি উৎসাহ আর উদ্দীপনা নিয়ে ঘরে ফিরলেন তাদের কর্মীরা। এক লাফে বেড়ে গিয়েছে আত্মবিশ্বাস। যার ফল আজ, বৃহস্পতিবার থেকেই টের পাওয়া যাবে।
এ দিন ব্রিগেড ভরাতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেননি বিজেপি নেতৃত্ব। গোটা জেলা ঝেঁটিয়ে ট্রেনে-বাসে কর্মীদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে জেলায় ভোটের প্রচারের এ দিন ছিল ‘হলি-ডে’। যা কিছু প্রচার সব ওই ব্রিগেড থেকে টিভির পর্দায়। অন্যদের থেকে অনেক দেরি করে প্রার্থী ঘোষণা হওয়ায় এমনিতেই ময়দানে নামতে হয়েছে বিজেপির। দেওয়াল লেখা থেকে মিছিল, ধারে-ভারে তৃণমূলের চেয়ে এখনও তারা কিছুটা হলেও পিছিয়ে। এই পরিস্থিতিতে যাঁর নামে ভোট চাওয়া হচ্ছে, কার্যত সেই নরেন্দ্র মোদীর উপরেই আরও একটা দিন ছেড়ে দেওয়া হল।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিজেপি নেতাদের দাবি, জেলার মাঠঘাট চষে এক দিন প্রচার চালানোর থেকে অনেক বেশি লাভজনক হয়েছে ব্রিগেডে যাওয়া। দলের নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকারের দাবি, “ব্রিগেডে মানুষের ভিড় বার্তা দিচ্ছে, এ বার বাংলায় পরিবর্তন সুনিশ্চিত। আমাদের কর্মীরা সেই ভিড় দেখে আরও উৎসাহিত হয়েছেন।” তাঁর মতে, “মোদীজি যে ভাবে সমস্ত তথ্য দিয়ে দিয়ে বক্তব্য দিলেন তাতে আমাদের কর্মীরা দ্বিগুন আত্মবিশ্বাস নিয়ে ফিরে এলেন। তাঁরা এখন অনেক বেশি চাঙ্গা। কাল থেকে তার প্রমাণ পাবেন।”
দলের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি জগন্নাথ সরকার আবার বলছেন, “মোদীজির এ দিনের বক্তৃতায় আমাদের কর্মীরা অনেক সমৃদ্ধ হলেন। অনেক কিছু জানতে পারলেন। এ বার সেগুলিই তাঁরা গ্রামে-গ্রামে প্রচার করবেন। মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারবেন।”
এর প্রতিধ্বনি মিলছে সাধারণ কর্মীদের মধ্যে থেকেও। তৃণমূলের কর্মীদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে মোদীর বক্তব্যের পাল্টা দিয়েছেন, তাতে বিজেপির লোকেদের ‘ব্রিগেডে ঘুরতে’ যাওয়াই সার হল। যা শুনে বিজেপি কর্মীরা বলছেন, “তৃণমূল সেই আনন্দেই নাচুক। ওরা বুঝতে পারছে না, আমরা কতটা শক্তি নিয়ে ফিরে এসেছি। এ বার ওরা ঠেলাটা বুঝবে।” তবে ভিড়ের চোটে মূল মাঠ পর্যন্ত পৌঁছতে পারেননি, এমন আফসোসও রয়েছে অনেকের। তবে বিজেপির ‘হলি-ডে’ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের কটাক্ষ, “কাউকেই তো কোনও দিন মাঠে দেখি না। আজ আর কী-ই বা ব্যতিক্রম হল!” তাঁর দাবি, “সারা বছরই আমাদের কর্মীরা মাঠে থাকেন। আমরা এ সব নিয়ে ভাবি না।”