Lockdown

ঘুগনির মশলা তাকে, দীনেশের হাতে লেবু

করোনা অতিমারিতে যেন বন্ধ হয়ে রয়েছে সংসার। কিন্তু তা বললে সংসার শুনবে কেন! উনুন তো জ্বালতে হবে।  সংসার তো চালাতে হবে। তাই পেশা বদলে সংসার চালানোর মরিয়া চেষ্টা করছেন অনেকে। তাঁদের কাহিনি।করোনা অতিমারিতে যেন বন্ধ হয়ে রয়েছে সংসার। কিন্তু তা বললে সংসার শুনবে কেন! উনুন তো জ্বালতে হবে।  সংসার তো চালাতে হবে। তাই পেশা বদলে সংসার চালানোর মরিয়া চেষ্টা করছেন অনেকে। তাঁদের কাহিনি।

Advertisement

মৃন্ময় সরকার

জিয়াগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২০ ০৬:৩৬
Share:

দীনেশ মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

প্রতিদিন সকাল হলেই ঘুগনি নিয়ে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়তেন জিয়াগঞ্জের বাসিন্দা দীনেশ মণ্ডল। তারপর জিয়াগঞ্জ স্টেশন থেকে সকালের লালগোলা শিয়ালদহ প্যাসেঞ্জারে চেপে সারা দিন কেটে যেত। তার পর সেই সন্ধ্যার প্যাসেঞ্জারে বাড়ি ফেরা। ট্রেনে হকরি তেমন অভাবের মুখে পড়তে হয়েছে বলে মনে করতে পারছেন না দীনেশবাবু। কিন্তু প্রায় ছ'মাস হল, সে দিন অবশ্য বদলে গিয়েছে। লকডাউন শুরু হতেই বন্ধ হয়েছে ট্রেন আর যার ফলে বিপাকে পড়েছেন দীনেশ।

Advertisement

জিয়াগঞ্জের কাশিগঞ্জের বাসিন্দা দীনেশ প্রায় ৩০ বছর ধরে লালগোলা শিয়ালদন প্যাসেঞ্জারে ঘুগনি হকারি করে বিক্রি করেন। প্রতিদিন সারাদিন লালগোলা শিয়ালদহ প্যাসেঞ্জারেই কেটে যেত। দীনেশ বলেন, স্টেশনে স্টেশনে যেন আত্মীয়রাই থাকতেন। কত নিত্যযাত্রীর সঙ্গে রীতিমতো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল। লালগোলা প্যাসেঞ্জার অনেকটা পথ পাড়ি দেয়। যাত্রীদের খিদে পায়। তাঁরা দীনেশের কাছ থেকেই সকালের ব্রেকফাস্ট থেকে শুরু করে সন্ধের জলখাবার সবই পেতেন। দীনেশ খেয়াল রাখতেন খাবারের মানের দিকে। রোজগারও হত ভাল।

কিন্তু লকডাউন বদলে দিয়েছে চিত্রটা। দীনেশ আর ঘুগনির হকার নন। এখন তিনি ফল বিক্রেতা। এখন একটা ভ্যানে করে বিভিন্ন ধরনের ফল নিয়ে জিয়াগঞ্জে ঘুরে বিক্রি করেন তিনি আবার কখনও জিয়াগঞ্জ বাজারেও ফল বিক্রি করেন। পেশা বদল হয়েছে ছ’মাস আগেই। তবুও তাতেও তেমন রোজগার নেই। দীনেশ জানাচ্ছেন, লকডাউনের খাদ্যদ্রব্যের উপরেই ছাড় দিয়েছিল সরকার। তাতে যারা হকার ছিলেন তাঁরা বেশিরভাগই আনাজ, ফল ও মাছ বিক্রি শুরু করেন। তবে, এখন লকডাউন উঠলেও চালু হয়নি ট্রেন কাজেই এখনও ট্রেনের হকাররা কেউই পুরনো পেশায় ফিরতে পারেননি।

Advertisement

কিন্তু পুরনো ফল বিক্রেতারা কেন জায়গা ছাড়বেন? তা ছাড়া, ক্রেতারাই বা নতুন লোকের কাছ থেকে কেন ফল কিনবেন? তাই ভাল ব্যবসাও হচ্ছে না। দীনেশ বলেন, ‘‘ট্রেন থেমে থাকলেও পেট তো আর থামবে না। কাজেই এক বন্ধুর ভ্যান চেয়ে নিয়ে ফল বিক্রি শুরু করি। কিন্তু তাতেও তো সেই রোজগার নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement